মোঃ আতিকুর রহমান, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার মাঝি এ্যাডভোকেট রঞ্জিত চন্দ্র সরকার গতকাল দুপুরে সিলেট থেকে সুনামগঞ্জে আসেন। এ সময় তিনি জেলা শহরের রমিজ বিপণী মার্কেটে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এসে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট ও সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ।
এ সময় রঞ্জিত সরকারকে স্বাগত জানাতে তার নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রায় ৫ হাজার মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে নেতাকর্মীরা এসে আব্দুজ জহুর সেতুতে অপেক্ষা করতে থাকেন। জেলা নেতা-কর্মীদের সাথে আলোচনা শেষে তিনি
তার নির্বাচনী এলাকা থেকে তাকে স্বাগত জানাতে আসা আব্দুজ জহুর সেতুতে অপেক্ষমান নেতা-কর্মীদের পাঁচ হাজার মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতু থেকে নিজের জন্মস্থান তাহিরপুর উপজেলায় যান রঞ্জিত সরকার। এ সময় তাহিরপুর উপজেলা সদরের পূর্ব বাজারে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য দেন রঞ্জিত। এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার মতো একজন ক্ষুদ্র কর্মীর হাতে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ, আনন্দিত। সুনামগঞ্জ এক আসনের ভোটারদে কাছে নিজেকে স্নেহ-মমতা দিয়ে আগলে রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের কর্মী হিসেবে থাকতে চাই।
আমি নিবেদিত প্রাণ আওয়ামীলীগ কর্মী। ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থ বিত্তের পেছনে ঘুরিনি। আমি রিক্ত হস্তে এসেছি, আপনাদের সহযোগিতায় ভালোবাসায় এ আসন থেকে বিজয়ী হয়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে নৌকা উপহার দিতে চাই।
তিনি বলেন, যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা অতীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে এই অঞ্চলে বারবার নির্বাচন করেছে। আশা করি তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে সকলকে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুছ ছোবহান আখঞ্জি, বর্তমান সভাপতি আবুল হোসেন খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলী মতুর্জা, সাধারণ সম্পাদক অমল কর, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর খোকন,মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ সরকার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর খছরু, ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই তালুকদার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ,তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার লিটন,সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য শামীম আখঞ্জী,ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জুবায়ের পাশা হিমু, তাহিরপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনুর তালুকদার, সাধারন সম্পাদক বাবুল মিয়া, বালীজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ মিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান,বেহেলী ইউ/পি চেয়ারম্যান সুব্রত সামন্ত সরকার প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় তিনি ১নং শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের নতুন বাজারে অবস্থিত তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন খানের কার্যালয়ে যান এবং ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
অপরদিকে সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব, পিএসসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিককে অভ্যর্থনা জানায় সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ। বুধবার দুপুরে ড. সাদিক সুনামগঞ্জ শহরে এলে শহরের সার্কিট হাউজে প্রথমে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এখানে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে রমিজ বিপণির দলীয় কার্যালয়ে আসেন ড. সাদিক। দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত জেলা নেতৃবৃন্দসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ড. সাদিক। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বক্তব্য দেন।
ড. সাদিক তাঁর বক্তব্যে বলেন, বহুদিন পরে সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুরের মানুষের সুখ—দুঃখের কথা চিন্তা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দিয়েছেন। এই নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু’র প্রতীক, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক, স্বপ্নের প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক। নৌকার বিজয় হলে শেখ হাসিনার বিজয় হবে।
তিনি বলেন, আমি লিডার হবার জন্য আসিনি, আমি আওয়ামী লীগের একজন শ্রেষ্ঠ কর্মী হতে চাই। আমি এই এলাকার মানুষের দুঃখ দেখেছি। আমি ধূলি মাখা পথে, কাঁদা মাটিতে বড় হয়েছি। আমি আপনাদের হৃদয়ের ভাষা বুঝি। আপনাদের দুঃখ দূর করতে না পারলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট শেয়ার করতে পারবো।আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে আমরা যেনো নৌকা তুলে দিতে পারি এই মিনতি করছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বললেন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের নেতা কর্মীদের দাবি ছিল জেলা সদরের এই আসনে যেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়। আমাদের দাবি রক্ষা করেছেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের দায়িত্ব এখন ড. সাদিক কে বিজয়ী করে দলীয় সভানেত্রীকে আসনটি উপহার দেওয়া।
সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট বলেন, নতুন কমিটি হওয়ার পর আমরা ঘোষণা করেছিলাম সুনামগঞ্জ সদর আসনে সুনামগঞ্জ-বাসীকে আমরা নৌকা উপহার দেবো। আমরা আমাদের কথা রেখেছি। দলের দাবি পূরণ করে দলীয় সভানেত্রী পরিচ্ছন্ন ইমেজের একজন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে। এখন আপনাদের দায়িত্ব আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে এই আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া।
তিনি আরও বলেন,আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে দলের প্রতীক নৌকার সম্মান রাখতে হবে, বিজয়ী করতে হবে ড. মোহাম্মদ সাদিককে। সদরের এই আসনে দলের এমপি থাকলে, দল আরও শক্তিশালী হবে। নৌকা বিজয়ী হলে উনি মন্ত্রী হবেন এবং সুনামগঞ্জের উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন।
ড. সাদিক পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের প্রতি এবং ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন তিনি।
পক্ষান্তরে পৌর শহরে মোটর সাইকেল শো-ডাউন করেছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। বুধবার বিকালে জেলা শহরের হাছন নগরে অবস্থিত তার বাসভবনের সামনে থেকে শো-ডাউনটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিহারী পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। তিনি বলেন, বিগত ১০ বছর আমি এই আসনের এমপি থাকাবস্থায় এলাকার স্বার্থে কাজ করেছি। আগামীতে আবারও নির্বাচিত হলে এই আসনের উন্নয়নের ধারাকে আমি অব্যাহত রাখব। আমি রাজপথের রাজনীতি থেকে উঠে এসেছি। সুনামগঞ্জের অনেক বরেণ্য রাজনীতিবিদের কমী ছিলাম আমি। দুর্নীতি বিরোধী স্থানীয় আন্দোলনসহ অনেক আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্বে ছিলাম। রাজনীতিতে স্নেহ—সান্নিধ্য পেয়েছি অনেক জাতীয়—স্থানীয় নেতার। সংসদে এবং এলাকায় মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। অনেক কাজ করেছি, অনেক কাজ করতে পারিনি। ইচ্ছার কমতি ছিল না। সবার উপকার করতে পারি নি। দৃঢ়ভাবে এটিও বলছি, কারও কোন ক্ষতি করিনি। সবাইকে সম্মান দিয়েই পথ চলেছি। বোবা হয়ে সংসদে বসে থাকিনি। সংসদের ভেতরে বাইরে মানুষের কথা বলেছি। তারপরও ভুল থাকতে পারে।পথ চলায় কোন ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মনির উদ্দিন মনির জাপা নেতা সাইফুর রহমান শামছু, জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান রসিদ আহমদ, গৌরারং ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী, ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ প্রমুখ। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন আজ।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের ৫ টি সংসদীয় আসন থেকে বুধবার পর্যন্ত মোট ৩৭ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৩৩ জন প্রার্থী। গতকাল বুধবার সুনামগঞ্জে নতুন করে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৪ জন প্রার্থী। তারা হলেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুল মান্নান, সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে তৌফিক আলী, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মতিউর রহমান ও বিএনএম প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান শামসুল আবেদীন।
এ সময় রঞ্জিত সরকারকে স্বাগত জানাতে তার নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রায় ৫ হাজার মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে নেতাকর্মীরা এসে আব্দুজ জহুর সেতুতে অপেক্ষা করতে থাকেন। জেলা নেতা-কর্মীদের সাথে আলোচনা শেষে তিনি
তার নির্বাচনী এলাকা থেকে তাকে স্বাগত জানাতে আসা আব্দুজ জহুর সেতুতে অপেক্ষমান নেতা-কর্মীদের পাঁচ হাজার মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতু থেকে নিজের জন্মস্থান তাহিরপুর উপজেলায় যান রঞ্জিত সরকার। এ সময় তাহিরপুর উপজেলা সদরের পূর্ব বাজারে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য দেন রঞ্জিত। এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার মতো একজন ক্ষুদ্র কর্মীর হাতে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ, আনন্দিত। সুনামগঞ্জ এক আসনের ভোটারদে কাছে নিজেকে স্নেহ-মমতা দিয়ে আগলে রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের কর্মী হিসেবে থাকতে চাই।
আমি নিবেদিত প্রাণ আওয়ামীলীগ কর্মী। ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থ বিত্তের পেছনে ঘুরিনি। আমি রিক্ত হস্তে এসেছি, আপনাদের সহযোগিতায় ভালোবাসায় এ আসন থেকে বিজয়ী হয়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে নৌকা উপহার দিতে চাই।
তিনি বলেন, যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা অতীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে এই অঞ্চলে বারবার নির্বাচন করেছে। আশা করি তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে সকলকে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুছ ছোবহান আখঞ্জি, বর্তমান সভাপতি আবুল হোসেন খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলী মতুর্জা, সাধারণ সম্পাদক অমল কর, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর খোকন,মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ সরকার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর খছরু, ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই তালুকদার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ,তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার লিটন,সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য শামীম আখঞ্জী,ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জুবায়ের পাশা হিমু, তাহিরপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনুর তালুকদার, সাধারন সম্পাদক বাবুল মিয়া, বালীজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ মিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান,বেহেলী ইউ/পি চেয়ারম্যান সুব্রত সামন্ত সরকার প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় তিনি ১নং শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের নতুন বাজারে অবস্থিত তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন খানের কার্যালয়ে যান এবং ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
অপরদিকে সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব, পিএসসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিককে অভ্যর্থনা জানায় সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ। বুধবার দুপুরে ড. সাদিক সুনামগঞ্জ শহরে এলে শহরের সার্কিট হাউজে প্রথমে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এখানে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে রমিজ বিপণির দলীয় কার্যালয়ে আসেন ড. সাদিক। দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত জেলা নেতৃবৃন্দসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ড. সাদিক। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বক্তব্য দেন।
ড. সাদিক তাঁর বক্তব্যে বলেন, বহুদিন পরে সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুরের মানুষের সুখ—দুঃখের কথা চিন্তা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দিয়েছেন। এই নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু’র প্রতীক, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক, স্বপ্নের প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক। নৌকার বিজয় হলে শেখ হাসিনার বিজয় হবে।
তিনি বলেন, আমি লিডার হবার জন্য আসিনি, আমি আওয়ামী লীগের একজন শ্রেষ্ঠ কর্মী হতে চাই। আমি এই এলাকার মানুষের দুঃখ দেখেছি। আমি ধূলি মাখা পথে, কাঁদা মাটিতে বড় হয়েছি। আমি আপনাদের হৃদয়ের ভাষা বুঝি। আপনাদের দুঃখ দূর করতে না পারলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট শেয়ার করতে পারবো।আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে আমরা যেনো নৌকা তুলে দিতে পারি এই মিনতি করছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বললেন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের নেতা কর্মীদের দাবি ছিল জেলা সদরের এই আসনে যেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়। আমাদের দাবি রক্ষা করেছেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের দায়িত্ব এখন ড. সাদিক কে বিজয়ী করে দলীয় সভানেত্রীকে আসনটি উপহার দেওয়া।
সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট বলেন, নতুন কমিটি হওয়ার পর আমরা ঘোষণা করেছিলাম সুনামগঞ্জ সদর আসনে সুনামগঞ্জ-বাসীকে আমরা নৌকা উপহার দেবো। আমরা আমাদের কথা রেখেছি। দলের দাবি পূরণ করে দলীয় সভানেত্রী পরিচ্ছন্ন ইমেজের একজন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে। এখন আপনাদের দায়িত্ব আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে এই আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া।
তিনি আরও বলেন,আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে দলের প্রতীক নৌকার সম্মান রাখতে হবে, বিজয়ী করতে হবে ড. মোহাম্মদ সাদিককে। সদরের এই আসনে দলের এমপি থাকলে, দল আরও শক্তিশালী হবে। নৌকা বিজয়ী হলে উনি মন্ত্রী হবেন এবং সুনামগঞ্জের উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন।
ড. সাদিক পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের প্রতি এবং ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন তিনি।
পক্ষান্তরে পৌর শহরে মোটর সাইকেল শো-ডাউন করেছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। বুধবার বিকালে জেলা শহরের হাছন নগরে অবস্থিত তার বাসভবনের সামনে থেকে শো-ডাউনটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিহারী পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। তিনি বলেন, বিগত ১০ বছর আমি এই আসনের এমপি থাকাবস্থায় এলাকার স্বার্থে কাজ করেছি। আগামীতে আবারও নির্বাচিত হলে এই আসনের উন্নয়নের ধারাকে আমি অব্যাহত রাখব। আমি রাজপথের রাজনীতি থেকে উঠে এসেছি। সুনামগঞ্জের অনেক বরেণ্য রাজনীতিবিদের কমী ছিলাম আমি। দুর্নীতি বিরোধী স্থানীয় আন্দোলনসহ অনেক আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্বে ছিলাম। রাজনীতিতে স্নেহ—সান্নিধ্য পেয়েছি অনেক জাতীয়—স্থানীয় নেতার। সংসদে এবং এলাকায় মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। অনেক কাজ করেছি, অনেক কাজ করতে পারিনি। ইচ্ছার কমতি ছিল না। সবার উপকার করতে পারি নি। দৃঢ়ভাবে এটিও বলছি, কারও কোন ক্ষতি করিনি। সবাইকে সম্মান দিয়েই পথ চলেছি। বোবা হয়ে সংসদে বসে থাকিনি। সংসদের ভেতরে বাইরে মানুষের কথা বলেছি। তারপরও ভুল থাকতে পারে।পথ চলায় কোন ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মনির উদ্দিন মনির জাপা নেতা সাইফুর রহমান শামছু, জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান রসিদ আহমদ, গৌরারং ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী, ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ প্রমুখ। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন আজ।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের ৫ টি সংসদীয় আসন থেকে বুধবার পর্যন্ত মোট ৩৭ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৩৩ জন প্রার্থী। গতকাল বুধবার সুনামগঞ্জে নতুন করে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৪ জন প্রার্থী। তারা হলেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুল মান্নান, সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে তৌফিক আলী, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মতিউর রহমান ও বিএনএম প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান শামসুল আবেদীন।