এশিয়া কাপের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার ম্যাচে আজ পাকিস্তানের লাহোরে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এরপর বেশ কিছু চমকের সাক্ষী হয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। সবাইকে অবাক করে দিয়ে আজ ওপেনিংয়ে নাঈম শেখের সঙ্গী হয়েছিলেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। ৬০ রানের সফল ওপেনিং জুটির পর দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিও করেছেন তিনি। এরপর টাইগারদের দ্রুত দুই হারানোর পর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে গড়েছেন ১৯৪ রানের রেকর্ড জুটি, শতক হাঁকিয়েছেন শান্ত নিজেও।
দুই টপ অর্ডারের জোড়া শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। টাইগারদের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটিই তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। মিরাজ এর আগে আরও একবার ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন ২০১৮ সালে। এশিয়া কাপে সেবার তামিম ইকবাল চোটে পড়ায় এমনটি করতে হয়েছিল তাকে। এরপর আজ আবার ম্যাচ উদ্বোধন করতে নেমেই বাজিমাত করেছেন মিরাজ।
নাঈম-মিরাজের ওপেনিং জুটিতে আজ উড়ন্ত সূচনাই পেয়েছিল বাংলাদেশ। শুরুটা অবশ্য করেছিলেন নাঈমই। আফগান পেসার ফজলহক ফারুকির প্রথম ওভারেই দুইটি মার মেরে শুভসূচনা করেছিলেন তিনি। কিন্তু দলীয় ৬০ রানেই মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে। সাজঘরে ফেরার আগে ৩২ বল খেলে ৫টি চারে ২৮ রান করেন তিনি।
এদিকে নাঈমের ফেরার পর ব্যাট হাতে আজ নেমেছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তবে আজও হতাশ করেছেন তিনি। দুই বল খেলে রানের খাতা না খুলেই ফিরে যেতে হয় তাকে। এদিকে ৩ রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারানোর পর দল যখন বিপাকে তখন মাঠে নামেন শান্ত।
আর মিরাজের সঙ্গে শান্তর জুটিতেই আজ বড় সংগ্রহের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। ৬৫ বলে অর্ধশতক পূরণ করা মিরাজ তুলে নিয়েছেন ওপেনিংয়ে নেমে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিও। ১১৫ বল খেলে ৬ চার এবং ২ ছয়ে এ মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ব্যাট হাতে এটি তাঁর দ্বিতীয় শত রানের ইনিংস। এর আগে গতবছর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
এদিকে মিরাজের দুর্দান্ত শতকের পর নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক পূরণ করেছেন শান্তও। আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮৮ রান করেই আউট হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আজ আর নিজের মাইলফলকে পৌঁছুতে ব্যর্থ হননি তিনি। ১০১ বল খেলে ৯ চার এবং ২ ছয়ে এ কীর্তি গড়েছেন তিনি। এদিকে সেঞ্চুরি করার পরই মিরাজ গ্লাভস খুলে ফেলেন আঙুলে ক্র্যাম্পের জন্য। এরপর ফিজিওর সঙ্গে উঠেই গেছেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
এদিকে দলীয় ২৭৮ রানে আগের ম্যাচে মিরাজের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হতে গিয়েও একবার বেঁচে গিয়েছিলেন শান্ত। মিরাজ ওঠে যাওয়ার পর মুশফিকের সঙ্গে পরে আবার এক ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়েই থামতে হয় তাকে। রিভার্স সুইপ করেই দৌড় শুরু করেছিলেন তিনি, তবে ফিল্ডারের কাছে সরাসরি যাওয়াতে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন এই বামহাতি ব্যাটার। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে গিয়ে পিছলে পড়ে যান, ফলে ক্রিজে আর ফেরা হয়নি তাঁর। ১০৫ বলে ১০৪ রানের দারুণ ইনিংসে থামতে হয় শান্তকে।
এরপর সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখে মুশফিক। তবে দলীয় ২৯৪ রানে সাকিবের সিঙ্গেলের ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছিলেন মুশফিক। তবে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। ১৫ বলে ২৫ করেন তিনি। এরপর সাকিবের ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান করে বাংলাদেশ।