এক ব্যক্তির কাছ থেকে চড়া সুদে এক কোটি ৭৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে না পেরে ফেসবুক লাইভে এসে চলন্ত লঞ্চ নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন এক যুবক। তিনি বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের রাজারচর গ্রামের এমদাদুল্লাহর ছেলে রাজা আসাদুল্লাহ। চরমোনাইতে রাজা অ্যাগ্রো নামের পোল্ট্রি খামার রয়েছে তার। ঋণদাতা হচ্ছেন একই গ্রামের বাসিন্দা মো. মঞ্জুর মোর্শেদ।
এদিকে দীর্ঘ ১১ দিন ধরে নিখোঁজ রাজার সন্ধানে বুধবার বিকালে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার স্ত্রী সালমা আক্তার।
যুবকের লাইভ ভিডিওর সূত্র ধরে কোতয়ালি মডেল থানায় বুধবার (২৩ আগস্ট) সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে তার পরিবার।
সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন।
এদিকে চরমোনাই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাকিল রাঢ়ী দাবি করেছেন, ওই যুবক নদীতে ঝাঁপ দেয়নি। শুনেছি তার ভাই রহমাতুল্লাহ ভাইয়ের ঢাকার বাসায় রয়েছেন। পাওনাদারের কাছ থেকে রক্ষা পেতে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার নাটক করেছেন তিনি।
আর বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নিখোঁজ রাজা আসাদুল্লাহ তার ফুফাতো ভাই।
তিনি জানান, রাজা সুদে ও বিভিন্ন এনজিও থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা ঋণ নিয়েছে। সঠিক পরিমাণ বলতে পারব না। তবে বিশাল অঙ্কের টাকা ঋণী সে। ৫/৬ দিন আগে একবার এসেছিল সে। তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। শুনেছি মঙ্গলবার রাতে রাজা লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। আমরাও খোঁজ করছি।
রাজা কারও টাকা আত্মসাৎ করবে না দাবি করে রহমাতুল্লাহ বলেন, আমাকেও অনেকে ফোন দিয়েছে। সত্যি বলছি সে আসেনি। এ ধরনের ঘটনা এরআগেও সে করেছিল। রাজা যে টাকার ঋণ করেছে, সেই টাকার চেয়ে বেশি জমি রয়েছে। কারও টাকা আত্মসাৎ করবে না সে।
এদিকে রজার স্ত্রী সালমা আক্তার বলেন, প্রায় ১১ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয় রাজা। এরপর মাঝেমধ্যে রাতের বেলা কল দিয়ে কথা বলতো। তবে পাওনাদারদের ভয়ে মোবাইল ফোন বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকতো। হঠাৎ মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে ভাগ্নি আঁখি জানায়, তার মামা রাজা ফেসবুক লাইভে এসে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। এরপর স্বজনরা অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাই কোতয়ালি মডেল থানায় নিখোঁজ জিডি করেছি।
রাজার ‘Raja Agro Chamonai’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে করা ১১ মিনিটে ৫১ সেকেন্ডের ওই লাইভে দেখা যায়, কোন একটি যাত্রীবাহী লঞ্চের নীচতলার পেছনের অংশে ফ্যান্টারে মোবাইল নিয়ে অবস্থান করছিলেন রাজা। যদিও তার মুখ দেখা যায়নি, তবে সে লাইভে এসে শুরুতে বলতে থাকেন- যতক্ষণ শ্বাস থাকবে ততক্ষণ হাত জাগাইয়া ধইরা রাখবো, আমার যারা আত্মীয় স্বজন রয়েছেন তারা আর অপেক্ষা করবেন না, যে আমি কোনোদিন ফিরে আসব, কোনোদিন ফোন দেব। এরপর দীর্ঘসময় ভিডিওটি চলতে থাকলেও তিনি আর কোন কথা বলেননি। শেষের দিকে এসে কালেমা পাঠসহ বিভিন্ন দোয়া পড়তে থাকেন। আর বলেন মৃত্যুর কারণ হিসেবে আমি একটি লিখিত পোস্ট দিয়ে রাখছি। এর কিছুক্ষণ পরই সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়।
রাজার ফেসবুক আইডিতে লাইভের আগের পোস্টে হাতে লেখা একটি চিঠির ছবি পাওয়া যায়। সেই চিঠি থেকে যা পাওয়া যায়, রাজা অ্যাগ্রো নামে একটি কৃষি প্রজেক্ট রয়েছে তার। তার নিজ এলাকার মো. মঞ্জুর মোর্শেদ খানের কাছ থেকে কয়েক দফায় ১ কোটি টাকার বেশি ব্যবসার উদ্দেশ্যে আনেন তিনি এবং মোটা অঙ্কের লাভ দিয়ে আসছিলেন তিনি। ২০২২ সালে আমার ফার্মের ২১ হাজার মুরগি মারা গেলে প্রজেক্ট থেকে আয়ে ভাটা পড়ে। তবে বিভিন্ন উপায়ে প্রজেক্ট ধরে রাখার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন উপায়ে টাকা এনে মোর্শেদ খানের মাসিক ও বাৎসরিক লাভের টাকা দিয়েছেন এবং প্রজেক্টে খরচ করেন রাজা। গত ১২ আগস্ট মোর্শেদ খানের টাকা পরিশোধের একটা বৈঠক হয়। এরপর সবার পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য রাজা প্রতি শতাংশ জমি দুই লাখ টাকা দরে বিক্রি করতে চাইলে নানা অযুহাত তোলেন এবং রাজার জমি দখলের লোভে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় মোর্শেদ খান।
রাজা হাতে লেখা চিঠির শেষে উল্লেখ করেন, আমি ৩ বছরে ৬০ লাখ টাকা দিয়েছি অনেক সম্পদ নষ্ট করে এবং প্রতি মাসে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি অনেক কষ্ট করে। তারপরও আমার জমিতে সাইনবোর্ড মেনে নিতে পারলাম না। তাই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম যা লাইভে প্রমাণ আছে।
এদিকে দীর্ঘ ১১ দিন ধরে নিখোঁজ রাজার সন্ধানে বুধবার বিকালে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার স্ত্রী সালমা আক্তার।
যুবকের লাইভ ভিডিওর সূত্র ধরে কোতয়ালি মডেল থানায় বুধবার (২৩ আগস্ট) সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে তার পরিবার।
সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন।
এদিকে চরমোনাই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাকিল রাঢ়ী দাবি করেছেন, ওই যুবক নদীতে ঝাঁপ দেয়নি। শুনেছি তার ভাই রহমাতুল্লাহ ভাইয়ের ঢাকার বাসায় রয়েছেন। পাওনাদারের কাছ থেকে রক্ষা পেতে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার নাটক করেছেন তিনি।
আর বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নিখোঁজ রাজা আসাদুল্লাহ তার ফুফাতো ভাই।
তিনি জানান, রাজা সুদে ও বিভিন্ন এনজিও থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা ঋণ নিয়েছে। সঠিক পরিমাণ বলতে পারব না। তবে বিশাল অঙ্কের টাকা ঋণী সে। ৫/৬ দিন আগে একবার এসেছিল সে। তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। শুনেছি মঙ্গলবার রাতে রাজা লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। আমরাও খোঁজ করছি।
রাজা কারও টাকা আত্মসাৎ করবে না দাবি করে রহমাতুল্লাহ বলেন, আমাকেও অনেকে ফোন দিয়েছে। সত্যি বলছি সে আসেনি। এ ধরনের ঘটনা এরআগেও সে করেছিল। রাজা যে টাকার ঋণ করেছে, সেই টাকার চেয়ে বেশি জমি রয়েছে। কারও টাকা আত্মসাৎ করবে না সে।
এদিকে রজার স্ত্রী সালমা আক্তার বলেন, প্রায় ১১ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয় রাজা। এরপর মাঝেমধ্যে রাতের বেলা কল দিয়ে কথা বলতো। তবে পাওনাদারদের ভয়ে মোবাইল ফোন বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকতো। হঠাৎ মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে ভাগ্নি আঁখি জানায়, তার মামা রাজা ফেসবুক লাইভে এসে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। এরপর স্বজনরা অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাই কোতয়ালি মডেল থানায় নিখোঁজ জিডি করেছি।
রাজার ‘Raja Agro Chamonai’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে করা ১১ মিনিটে ৫১ সেকেন্ডের ওই লাইভে দেখা যায়, কোন একটি যাত্রীবাহী লঞ্চের নীচতলার পেছনের অংশে ফ্যান্টারে মোবাইল নিয়ে অবস্থান করছিলেন রাজা। যদিও তার মুখ দেখা যায়নি, তবে সে লাইভে এসে শুরুতে বলতে থাকেন- যতক্ষণ শ্বাস থাকবে ততক্ষণ হাত জাগাইয়া ধইরা রাখবো, আমার যারা আত্মীয় স্বজন রয়েছেন তারা আর অপেক্ষা করবেন না, যে আমি কোনোদিন ফিরে আসব, কোনোদিন ফোন দেব। এরপর দীর্ঘসময় ভিডিওটি চলতে থাকলেও তিনি আর কোন কথা বলেননি। শেষের দিকে এসে কালেমা পাঠসহ বিভিন্ন দোয়া পড়তে থাকেন। আর বলেন মৃত্যুর কারণ হিসেবে আমি একটি লিখিত পোস্ট দিয়ে রাখছি। এর কিছুক্ষণ পরই সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়।
রাজার ফেসবুক আইডিতে লাইভের আগের পোস্টে হাতে লেখা একটি চিঠির ছবি পাওয়া যায়। সেই চিঠি থেকে যা পাওয়া যায়, রাজা অ্যাগ্রো নামে একটি কৃষি প্রজেক্ট রয়েছে তার। তার নিজ এলাকার মো. মঞ্জুর মোর্শেদ খানের কাছ থেকে কয়েক দফায় ১ কোটি টাকার বেশি ব্যবসার উদ্দেশ্যে আনেন তিনি এবং মোটা অঙ্কের লাভ দিয়ে আসছিলেন তিনি। ২০২২ সালে আমার ফার্মের ২১ হাজার মুরগি মারা গেলে প্রজেক্ট থেকে আয়ে ভাটা পড়ে। তবে বিভিন্ন উপায়ে প্রজেক্ট ধরে রাখার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন উপায়ে টাকা এনে মোর্শেদ খানের মাসিক ও বাৎসরিক লাভের টাকা দিয়েছেন এবং প্রজেক্টে খরচ করেন রাজা। গত ১২ আগস্ট মোর্শেদ খানের টাকা পরিশোধের একটা বৈঠক হয়। এরপর সবার পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য রাজা প্রতি শতাংশ জমি দুই লাখ টাকা দরে বিক্রি করতে চাইলে নানা অযুহাত তোলেন এবং রাজার জমি দখলের লোভে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় মোর্শেদ খান।
রাজা হাতে লেখা চিঠির শেষে উল্লেখ করেন, আমি ৩ বছরে ৬০ লাখ টাকা দিয়েছি অনেক সম্পদ নষ্ট করে এবং প্রতি মাসে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি অনেক কষ্ট করে। তারপরও আমার জমিতে সাইনবোর্ড মেনে নিতে পারলাম না। তাই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম যা লাইভে প্রমাণ আছে।