এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেই স্ট্যাটাসে তিনি তাঁর এক সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেন। অবন্তিকাকে নিয়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো দেশ উত্তাল, ঠিক সেই সময়ে মিডিয়ার সামনে এল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি ঘটনা।
এদিকে অবন্তিকার মতো শিক্ষক কর্তৃক হেনস্তার শিকার হন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ১৩তম আবর্তন ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম। শিক্ষক কর্তৃক কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পরীক্ষায় ফেল করানো হয় বলে দাবি ফারজানা মিমের। এ নিয়ে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।
জানতে চাওয়া হয়, আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী। আপনি আপনার বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিযোগ করলেন? মিম বলেন, আমার বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন একদিন ফোনে কাজের জন্য তাঁর ব্যক্তিগত অফিসে যেতে বলেন। সেখানেই মূলত ঘটনাটি ঘটে। সেদিন তিনি আমাকে কুপ্রস্তাব দেন। কুপ্রস্তাব দিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন না। প্রস্তাব দেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন। আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে চান।
আমি সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে তাৎক্ষণিকভাবে এই আচরণের প্রতিবাদ করি। আমার কাছে জানতে চাইতে পারেন, তাঁর ব্যক্তিগত অফিসে আমি কেন গেলাম? তিনি ছিলেন আমার শিক্ষক। আমার কাছে শিক্ষকের মর্যাদা ছিল অন্যরকম। আমি মফস্বলে বড় হয়েছি। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় পড়ালেখা করতে এসেছি। আমার বাবা–মায়ের শিক্ষা ছিল শিক্ষককে সম্মান, শ্রদ্ধা করতে হবে। শিক্ষকদের অভিভাবক মনে করতাম আমি।
তাই তাঁর অফিসে দেখা করতে যাই। কিন্তু এই ঘটনার পর মনে হলো, আমি আমার অভিভাবকের কাছে নিরাপদ না। এই ঘটনার পর আমি চেষ্টা করি বিষয়টিকে চেপে যাওয়ার। যেহেতু আমাদের দেশে নারীদের অবস্থান খুব একটা শক্ত না। আমি বললে হয়তো কেউ বিশ্বাসও করবে না। আবার শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনাটা খুব একটা সহজ বিষয় ছিল না।
তবে, শুরুতে চেপে গেলেও পরে আমাকে ক্লাসে বুলিংয়ের শিকার হতে হয়। আবার বিভাগের অফিস রুমে আমাকে হেনস্তার শিকার হতে হয়। শিক্ষকের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমাকে পরীক্ষায় ফেল করানো হয়। এসব বিষয় যখন সবার সামনে চলে আসে, তখন আসলে চুপ থাকতে পারিনি। কারণ, আমি তখন অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যাচ্ছিলাম।
একাধিক পাঠ্য বিষয়ে ফেল হওয়ার কারণে আমার শিক্ষাজীবন ধ্বংস হয়ে যায়। আমার পরিচয় তখন অর্নাস ফেল শিক্ষার্থী। যখন দেখি দেয়ালে আমার পিঠ ঠেকে গেছে, আমার ছাত্রজীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, তখন মুখ বুজে না থেকে প্রতিবাদ করেছি। আমার জীবনের সিংহভাগ তো ছাত্রজীবন। সেই জীবন শেষ; তাঁরা শেষ করে দিয়েছেন। তাই আমি আমার বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করি।
এ ঘটনায় আপনি কি হতাশাগ্রস্ত হয়েছিলেন? জবাবে মিম বলেন, আমি এখন অর্নাস ফেল করা একজন শিক্ষার্থী। মাঝে মাঝে ভাবি, বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে ভুল করলাম কি–না। দুবছর হয়ে গেল, আমি এখনো বিচার পেলাম না। আমি কয়েকবার তদন্ত কমিটির উপস্থিতিতে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। দুঃখের বিষয়, একাধিক তদন্ত কমিটি হওয়ার পরও অভিযুক্তরা বহাল তবিয়তে আছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। অভিযুক্ত শিক্ষক নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেননি। আমি আমার কথার সত্যতা প্রমাণ করেছি এবং এখন পর্যন্ত প্রমাণ করেই যাচ্ছি।
এ ঘটনার পর থেকে আমি এবং আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই যে আমি মিডিয়ার সামনে কথা বলছি, এর ফলে আমার পরবর্তী জীবন কী হবে, এ নিয়ে সন্দিহান। আমি ভবিষ্যতে কতটুকু স্বাভাবিক থাকতে পারব, তা বলতে পারছি না। সমাজ আমাকে কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নিয়ে চিন্তিত। তবুও মূল্যহীন হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে, সাহস নিয়ে বেঁচে থাকাটা শ্রেয় মনে হয় আমার কাছে।
জানতে চাওয়া হয়, এই ঘটনার কারণে একাডেমিক কাজে আপনি কী ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছেন? মিম বলেন, আমার ভোগান্তি শুরু হয়, যখন আমি বিষয়টি সবার সামনে আনি। আমি সেই শিক্ষকের কুপ্রস্তাবে সম্মতি দেইনি। বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম স্যারকে জানানোর পরেও সমাধান পাইনি। উল্টো আমি পরীক্ষায় ফেল করি। অভিযুক্ত শিক্ষক অন্য শিক্ষকদেরও বলেন আমাকে যেন পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া হয়। এ কারণে আমাকে ইনকোর্সে ৪০ নম্বরের মধ্যে ০ দেওয়া হয়। ক্লাসরুমে সেসব শিক্ষক আবার সবার সামনে আমাকে অপমানও করতেন।
যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমি যৌন হয়রানির অভিযোগ আনি, তিনি বিভাগীয় প্রধানকে নিজ দলে নিয়ে নেন। তাই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম আমাকে পরীক্ষায় কম নম্বর দেন। তিনি ৭ম, ৮ম সেমিস্টার পরীক্ষায় আমাকে ১০০–এর মধ্যে ৩ নম্বর দেন। আমি ভাইভাতে অংশগ্রহণ করি।
সব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেও ৫টা প্রশ্নের মধ্যে ৩টা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিই। কিন্তু শিক্ষকেরা আমার প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি পারছি না, যা বলছি সব ভুল বলছি। ভাইভাতে অংশগ্রহণের পরও আমাকে ০ দেওয়া হয়। ফলে আমি পরীক্ষায় ফেল করি। বিভাগের চেয়ারম্যান কেন, কীসের ভিত্তিতে আমাকে পরীক্ষায় ৩ নম্বর দিলেন, আমি এই বিষয়েও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।
এদিকে অবন্তিকার মতো শিক্ষক কর্তৃক হেনস্তার শিকার হন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ১৩তম আবর্তন ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম। শিক্ষক কর্তৃক কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পরীক্ষায় ফেল করানো হয় বলে দাবি ফারজানা মিমের। এ নিয়ে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।
জানতে চাওয়া হয়, আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী। আপনি আপনার বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিযোগ করলেন? মিম বলেন, আমার বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন একদিন ফোনে কাজের জন্য তাঁর ব্যক্তিগত অফিসে যেতে বলেন। সেখানেই মূলত ঘটনাটি ঘটে। সেদিন তিনি আমাকে কুপ্রস্তাব দেন। কুপ্রস্তাব দিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন না। প্রস্তাব দেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন। আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে চান।
আমি সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে তাৎক্ষণিকভাবে এই আচরণের প্রতিবাদ করি। আমার কাছে জানতে চাইতে পারেন, তাঁর ব্যক্তিগত অফিসে আমি কেন গেলাম? তিনি ছিলেন আমার শিক্ষক। আমার কাছে শিক্ষকের মর্যাদা ছিল অন্যরকম। আমি মফস্বলে বড় হয়েছি। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় পড়ালেখা করতে এসেছি। আমার বাবা–মায়ের শিক্ষা ছিল শিক্ষককে সম্মান, শ্রদ্ধা করতে হবে। শিক্ষকদের অভিভাবক মনে করতাম আমি।
তাই তাঁর অফিসে দেখা করতে যাই। কিন্তু এই ঘটনার পর মনে হলো, আমি আমার অভিভাবকের কাছে নিরাপদ না। এই ঘটনার পর আমি চেষ্টা করি বিষয়টিকে চেপে যাওয়ার। যেহেতু আমাদের দেশে নারীদের অবস্থান খুব একটা শক্ত না। আমি বললে হয়তো কেউ বিশ্বাসও করবে না। আবার শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনাটা খুব একটা সহজ বিষয় ছিল না।
তবে, শুরুতে চেপে গেলেও পরে আমাকে ক্লাসে বুলিংয়ের শিকার হতে হয়। আবার বিভাগের অফিস রুমে আমাকে হেনস্তার শিকার হতে হয়। শিক্ষকের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমাকে পরীক্ষায় ফেল করানো হয়। এসব বিষয় যখন সবার সামনে চলে আসে, তখন আসলে চুপ থাকতে পারিনি। কারণ, আমি তখন অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যাচ্ছিলাম।
একাধিক পাঠ্য বিষয়ে ফেল হওয়ার কারণে আমার শিক্ষাজীবন ধ্বংস হয়ে যায়। আমার পরিচয় তখন অর্নাস ফেল শিক্ষার্থী। যখন দেখি দেয়ালে আমার পিঠ ঠেকে গেছে, আমার ছাত্রজীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, তখন মুখ বুজে না থেকে প্রতিবাদ করেছি। আমার জীবনের সিংহভাগ তো ছাত্রজীবন। সেই জীবন শেষ; তাঁরা শেষ করে দিয়েছেন। তাই আমি আমার বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করি।
এ ঘটনায় আপনি কি হতাশাগ্রস্ত হয়েছিলেন? জবাবে মিম বলেন, আমি এখন অর্নাস ফেল করা একজন শিক্ষার্থী। মাঝে মাঝে ভাবি, বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে ভুল করলাম কি–না। দুবছর হয়ে গেল, আমি এখনো বিচার পেলাম না। আমি কয়েকবার তদন্ত কমিটির উপস্থিতিতে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। দুঃখের বিষয়, একাধিক তদন্ত কমিটি হওয়ার পরও অভিযুক্তরা বহাল তবিয়তে আছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। অভিযুক্ত শিক্ষক নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেননি। আমি আমার কথার সত্যতা প্রমাণ করেছি এবং এখন পর্যন্ত প্রমাণ করেই যাচ্ছি।
এ ঘটনার পর থেকে আমি এবং আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই যে আমি মিডিয়ার সামনে কথা বলছি, এর ফলে আমার পরবর্তী জীবন কী হবে, এ নিয়ে সন্দিহান। আমি ভবিষ্যতে কতটুকু স্বাভাবিক থাকতে পারব, তা বলতে পারছি না। সমাজ আমাকে কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নিয়ে চিন্তিত। তবুও মূল্যহীন হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে, সাহস নিয়ে বেঁচে থাকাটা শ্রেয় মনে হয় আমার কাছে।
জানতে চাওয়া হয়, এই ঘটনার কারণে একাডেমিক কাজে আপনি কী ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছেন? মিম বলেন, আমার ভোগান্তি শুরু হয়, যখন আমি বিষয়টি সবার সামনে আনি। আমি সেই শিক্ষকের কুপ্রস্তাবে সম্মতি দেইনি। বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম স্যারকে জানানোর পরেও সমাধান পাইনি। উল্টো আমি পরীক্ষায় ফেল করি। অভিযুক্ত শিক্ষক অন্য শিক্ষকদেরও বলেন আমাকে যেন পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া হয়। এ কারণে আমাকে ইনকোর্সে ৪০ নম্বরের মধ্যে ০ দেওয়া হয়। ক্লাসরুমে সেসব শিক্ষক আবার সবার সামনে আমাকে অপমানও করতেন।
যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমি যৌন হয়রানির অভিযোগ আনি, তিনি বিভাগীয় প্রধানকে নিজ দলে নিয়ে নেন। তাই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম আমাকে পরীক্ষায় কম নম্বর দেন। তিনি ৭ম, ৮ম সেমিস্টার পরীক্ষায় আমাকে ১০০–এর মধ্যে ৩ নম্বর দেন। আমি ভাইভাতে অংশগ্রহণ করি।
সব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেও ৫টা প্রশ্নের মধ্যে ৩টা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিই। কিন্তু শিক্ষকেরা আমার প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি পারছি না, যা বলছি সব ভুল বলছি। ভাইভাতে অংশগ্রহণের পরও আমাকে ০ দেওয়া হয়। ফলে আমি পরীক্ষায় ফেল করি। বিভাগের চেয়ারম্যান কেন, কীসের ভিত্তিতে আমাকে পরীক্ষায় ৩ নম্বর দিলেন, আমি এই বিষয়েও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।