মেলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে ফরিদপুরের মধুখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বন্ধু নিহত হয়েছেন। একই গ্রামে জন্ম তিনজনের। বেড়েও ওঠাও একসঙ্গে। তারা পৃথিবী থেকে বিদায়ও নিয়েছেন একসঙ্গে। তাদের কবরও দেওয়া হয়েছে পাশাপাশি। বুধবার (১৭ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই তিন বন্ধুকে বাগাট কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তিন তরুণের পরিবারেই চলছে শোকের মাতম।
এই দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন – উপজেলার বাগাট গ্রামের বিশ্বাসপাড়া এলাকার বাদশা বিশ্বাসের ছেলে জুবায়ের বিশ্বাস (১৯), ইদ্রিস আলী বিশ্বাসের ছেলে নাহিদ বিশ্বাস (১৮) ও মজিবর সরদারের ছেলে হুসাইন সরদার (১৯)। এরমধ্যে জুবায়ের এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পর বাগাট বাজারে ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করতেন। নাহিদ কলেজছাত্র এবং হুসাইন গতবছর এইচএসসি পাস করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে ইদ্রিস বিশ্বাসের মোটরসাইকেল নিয়ে তিন বন্ধু পাশেই কামারখালীতে ঋষি বটতলা এলাকায় মেলা দেখতে যান। তিনজনের মধ্যে শুধু নাহিদ বিশ্বাসের মাথায় হেলমেট ছিল। তারা মেলা দেখে ফেরার পথে ঝড়-বৃষ্টির কবলে পড়েন। ঝড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে একটি গাছ উপড়ে পড়েছিল। সেটি পাশ কাটাতে গিয়ে গাছের ডালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনজনই পড়ে যান। এ সময় মাগুরাগামী দ্রুতগতির একটি বাস তাদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
এই বিষয়ে বাগাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান খান জানান, তারা তিন জনই আত্মার বন্ধু। ভালো ছেলে হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিল। আচার-ব্যবহারও ভালো ছিল। আজ পর্যন্ত তাদের নামে কোনো রকম বদনাম শুনিনি। তাদের এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জানাজা শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্থানীয় বাগাট কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাদের তিনজনকে পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়েছে। এলাকার হাজার হাজার মানুষ তাদের জানাজায় অংশ নেন এবং অশ্রুসিক্ত নয়নে তাদের চিরবিদায় দেন।
মধুখালী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, মহাসড়কে তিন বন্ধু নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাত গাড়ি ও সেটির চালকের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনে মামলাটি রুজু করা হয়।