নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক মধুর হবে। শেখ হাসিনাকে টলানো এতো সহজ না।
তিনি বলেন, জাতির পিতার সঙ্গে তার কন্যার একটা ডিফারেন্স আছে। জাতির পিতা সবাইকে বিশ্বাস করতেন সেই সুযোগ নিতো বিশ্বাসঘাতকরা, জাতির পিতার কন্যা বিশ্বাসঘাতকদের চিনে রেখেছেন। তার ওপর আল্লাহর রহমত আছে। গত দুই বছর ধরে শুনতেছি সরকার পড়ে যাবে ক্ষমতায় আসতেছি এসব, কিচ্ছু হবে না। নির্বাচন হবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনের অবস্থিত একটি রেস্টুরেন্টে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সামনে আর কয়টা দিন। আগামী ১৫/২০ দিন দেশব্যাপী সহিংসতার চেষ্টা করা হবে। যারা করাবে তারা কিন্তু আড়ালেই থাকবে। যারা করবে তারা ফেঁসে যাবে। আমাদের এলাকার পাগলদেরও আমরা চিনি।
একেএম শামীম ওসমান বলেন, এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিক যদি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তবে মনে রাখবেন বঙ্গবন্ধু ও শেখ হসিনার পরিবার যেমন দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আবার তাদের পরিবারের কেউ অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও যোগ্যতা রাখে। কারণ শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে হাওয়া ভবন তৈরি করেননি। তিনি তার পরিবার সন্তানদের যোগ্য করে গড়ে তুলেছেন।
উন্নত দেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিদেশিদের দরজায় জোরে লাথি দিতে হবে। বলতে হবে, এই এটা বাংলাদেশ। নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। অন্য কারও নয়। ত্রিশ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে এই দেশের জন্য, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম গেছে। সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শুধু ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল আর রাশিয়া।
এখনো নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেননি উল্লেখ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, ১০০ পার্সেন্ট ফেয়ার নির্বাচন হবে। কেউ ঘাড়ও ঘুরাতে পারবে না। যারা নকল করে পাশ করে তাদের জন্য নয়, তবে আমাদের জন্য এটা সুখবর। আমরা যারা সারা বছর রাজপথে থাকি, পড়ালেখা করি। আমরা চাই রাজনীতিটা রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকুক।
তিনি বলেন, আমি যদি বলি পাঁচ মিনিটে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা হবে। তখন দোষ কার হবে, আমার হবে। যারা বাইরে থেকে নির্দেশ পেয়ে অরাজকতা করছে তারা কিন্তু ছাড় পাবে না। এবার ক্ষমতায় আসলে দুটি জিনিস ছাড় দেয়া হবে না। একটা মানি লন্ডারিং আর আরেকটা দুর্নীতি।
তিনি বলেন, আমি একটা ম্যাসেজ দিতে চাই। এতো উন্নয়ন হয়েছে, এ রাস্তা দিয়ে কী শুধু আওয়ামী লীগ চলবে। বিএনপির ছেলেরাও চলাফেরা করবে, জামায়াতের ছেলেরা চলবে। এই রাস্তার পাশে বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে, মেডিকেল কলেজ হবে। তার পাশে শেখ কামাল আইটি ইনস্টিটিউট হবে। কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমি শুধু ফতুল্লা এলাকায় ৬০০ কোটি টাকার রাস্তা করেছি। আমরা ৫৮টি বড় বড় বিল্ডিং করে দিয়েছে স্কুলের।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে উদ্দ্যেশ্য করে তিনি বলেন, ও মায়ের খবরই রাখে। সে কর্মীদের খবর কী রাখবে। সে ভিডিও বার্তা দিয়ে নাকি বলেন, তার নেতাকর্মী রাজপথে নেই, সেই তালিকা করছেন। আপনি নিজেই তো নাই। প্রথম তালিকাতে তো আপনিই পড়বেন।
তিনি বলেন, বিএনপির হয়ে সংহিসংতার জড়িয়ে প্রায় ত্রিশটি পরিবার থেকে আমার কাছে ফোন করে কান্নাকাটি করেছে। আমি কী করবো। এখন তো সবাই আইনের অধীনে। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার একজন ডাক্তার। আমি তাকে আরও এক মাস আগে বলেছিলাম আমি চাই কোন নিরপরাধ লোক যেন মামলায় না জড়ায়। সে যে দলেরই হোক না কেন। এটা আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করতে চাই। যারা এগুলো ঘটিয়েছে ২০১৪-১৫ সালে আগুন সন্ত্রাস করেছিল। এটা আমাদের ভুল হয়েছে। ওদের তখনই বিচার করা দরকার ছিল।
শামীম ওসমান বলেন, আমি হাতজোড় করে ক্ষমা চাই, আমি মানুষ। ফেরেশতার কোন ভুল নাই। যদি কোন ভুল করে থাকি ক্ষমা করে দেবেন আপনারা। আমি চাই কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন মামলার আসামি না হয়। কোন নিরপরাদ ব্যক্তি যদি এক ঘণ্টার জন্যও শাস্তি পায় সেটা খারাপ। আমি পুলিশ প্রশাসনসহ সকলকে এ ব্যাপারে খেয়াল রাখতে অনুরোধ করি।
আগামী ১৫ দিন কিছু নির্মম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চেষ্টা করা হবে। প্লিজ নারায়ণগঞ্জের ভাইয়েরা এগুলো করবেন না। যা করেছেন করে ফেলেছেন। আর না। নিরপরাদ কাউকে কিছু করবেন না কিন্তু যারা অপরাধী তাদের ছাড় দেয়া হবে না। যারা আমাকে মারতে চান মারেন সমস্যা নাই, আমাকে একা মারেন। কাপুরুষের মত বোমা হামলা কইরেন না। মানুষ মাইরেন না এতো।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হাসনাত বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, আওয়ামী লীগ নেতা সানাউল্লাহ, রবিউল প্রমুখ।