এবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, 'সাংবাদিকেরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে আমাকে টানার চেষ্টা করছেন। এই বিষয়টিকে স্বাগত জানাই। তবে আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব।' গতকাল সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে করা প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন ম্যাথিউ মিলার।
এদিকে ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। বিরোধী দলের অধিকাংশ নেতা কারাগারে থাকায় সংলাপ কীভাবে হবে? সরকারের দমন–পীড়নের মধ্যে বিরোধী দলের কে এই চিঠি গ্রহণ করলেন? এ ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের মন্তব্য কী? এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে সংলাপ সম্ভব?
এর উত্তরেই ম্যাথিউ মিলার নিজের অবস্থান পরিস্কার করেন। বলেন, 'বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষ নেবে না। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করে।' ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নকারী বলেন, গাজার মতো আরেকটি উত্তপ্ত স্থান বাংলাদেশ ও ঢাকা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে খুব শিগগিরই বাংলাদেশ ও ঢাকা গাজা উপত্যকায় পরিণত হবে।
বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ, যেখানকার ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ মানুষ গণতন্ত্রসহ অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পক্ষে। মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখা শুরু করলে বাংলাদেশের নাগরিকেরা খুব আশাবাদী হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ ছাড়া সব প্রধান রাজনৈতিক দল ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও অন্যান্য দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে কাজ করছে। মার্কিন সরকার কেন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে?
এর জবাবে মিলার বলেন, 'আমি অনেকবার যা বলেছি, তা-ই বলতে চাই। আর তা হলো, তাঁর দেশ বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করে। তারা মনে করেন, বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ দেশটির জনগণের দ্বারাই নির্ধারিত হওয়া উচিত।' ম্যাথিউ মিলার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে ব্রিফিংয়ে বলেন, 'আমি বহুবার বলেছি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সবার—সব রাজনৈতিক দল, ভোটার, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সুশীল সমাজের।'
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানেও অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন উজরা জেয়া। এ ছাড়া গত ৬ জুন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সমন্বয়ক জন কিরবি হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে একই কথা বলেছিলেন।