অবরোধ, সমাবেশ বা কর্মসূচির নামে সাধারণ মানুষের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
বুধবার (১ নভেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৮ অক্টোবর ও তৎপরবর্তী কর্মসূচিতে বিএনপির হামলায় আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এ সময় ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন ওইদিন (২৮ অক্টোবর) সমাবেশের নামে বিএনপির তাণ্ডব। পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় ঘটনাস্থলে একজন পুলিশ সদস্যকে প্রথমে পিটিয়ে তারপর তার মাথায় কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। বেশ কিছু পুলিশ ও আনসার সদস্য এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এখানে একজন সদস্য রয়েছেন, জানি না তার কী হবে। তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিয়ে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের সেবা দিচ্ছেন। এ জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
তিনি বলেন, `গতকালও (মঙ্গলবার) হামলায় (পুলিশ সদস্যরা) আহত হয়েছেন, তারাও এখানে চিকিৎসাধীন। যারা এসব হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘ওইদিন সমাবেশ যাতে শান্তিপূর্ণ হয় সে জন্য পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। প্রধান বিচারপতির বাসভবন যখন তারা আক্রমণ করে তখন তাদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলা হয় তাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। কিন্তু তাদের সঙ্গে কথা বলার পর পুলিশের ওপর আক্রমণের মাত্রা আরও বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ওইদিন তারা হঠাৎ করে একটি বাসে আগুন দিয়েছে। এরপর গাড়িতে হামলা করেছে। জনগণের জানমাল রক্ষার জন্য পুলিশের দায়িত্ব হিসেবে যেটুকু শক্তি প্রয়োগ করার প্রয়োজন ছিল সেটুকু করা হয়েছে।
আইজিপি বলেন, কোনো কর্মসূচি পালন করা মানুষের অধিকার। কিন্তু সাধারণ মানুষেরও স্বাভাবিকভাবে রাস্তায় চলাচল করার অধিকার রয়েছে। এই স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত করলে তাদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ সদস্য মারা যাওয়ার পরও পুলিশ সদস্যরা ধৈর্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। সাংবাদিকদের মূল্যবান তথ্য পুলিশের দায়িত্ব পালনে সহায়ক হয়। সেদিন নিজের জীবনবাজি রেখে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিটি ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসান মুহম্মদ তারিক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমানসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।