ইভান চৌধুরী, বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাস পরিচিতি পেয়েছে ‘বৃক্ষের জাদুঘর’ বা ‘বৃক্ষের মিউজিয়াম’ নামে। এ ক্যাম্পাসে দেখা মিলবে পৃথিবীর অতি দুর্লভ সব গাছ। ছায়া সুনিবিড় এ ক্যাম্পাসে বেড়ে উঠা এসব গাছ দেখতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ প্রতিদিনই বাড়ছে। এই ক্যাম্পাসে শতাধিক দুর্লভ প্রজাতির গাছ রয়েছে। তার মধ্যে ঘোড়া চাবুক গাছ অন্যতম। এই গাছকে বিনুনি নামেও ডাকা হয়ে থাকে।
‘ঘোড়া চাবুক’ গাছ সম্পর্কে জানা যায়, এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ারই গাছের আদি নিবাস। ভিজে মাটিযুক্ত অঞ্চলে স্বাভাবিক ভাবেই জন্মায়। গাছটির উচ্চতা হয় ৬-১০ ফুটের মতো। এর পাতার সঙ্গে পান পাতার কিছুটা মিল রয়েছে। ফুল খুব ছোট, মঞ্জরীপত্রের ভিতরেই থাকে বলে বাইরে থেকে দেখা যায় না। ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর মাসে ফুল ও ফল হয়। মঞ্জরীপত্রগুলো পুষ্পদণ্ডের এমন ভাবেই বিন্যস্ত থাকে যে দেখলে মনে হয় কেউ যেন সুন্দর করে বিনুনি বেঁধে রেখেছেন। তাই অনেকে এই গাছকে বিনুনি বলেও ডেকে থাকেন। বীজ থেকে খুব সহজেই চারা তৈরি করা গেলেও এই গাছটি অতি দুর্লভ প্রজাতির।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুপ্ত বলেন, ক্যাম্পাসে দুর্লভ প্রজাতির গাছ দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। ঘোড়া চাবুকসহ দুর্লভ গাছগুলো সত্যি আমাদের অহংকার।
ক্যাম্পাসে শুধু ঘোড়া চাবুক গাছই নয়, রয়েছে তেলসুর, ঢাকিজাম, টেবেবুইয়া, হলদু, ছোটহলদু, ইটোরিয়া, ঝুমকাভাদি, কাঞ্চনভাদি, চুন্দুল, বান্দরহুলা, নহিচিচি, উদাল, হিজল, কর্পুর, জাবাটিকাবা, সুলতানচাপা, বিলম্বি, গুস্তাভা, রুদ্রপলাশ, হলুদ পলাশ, স্বর্ণচাপা, বক্সবাদাম, জাকারান্ডা, সুন্দরী, কানাইডিঙা, মণিমালা, বাজনা, নাগেশ্বর, কফি, হিমজুড়ি, রক্তন, কুরচি, জাতবাটনা, আগর, রিঠা, লোহা, পীতরাজ, বলচ, ব্রেডফ্রুট, গুটগুইট্টা, তমাল, কুম্ভি, ধারমারা, রসকাউ, পাদাউক, তেজমাটাম, কণকচূড়া, পুত্রঞ্জীব, রুদ্রাক্ষ, উড়আম, হৈমন্তী, সিভিট, বাবলা, লালসোনাইল, পালাম, মাইলাম, কুসুম, ছোটহরিণা, কুচিলা, ক্ষুদিজম, রেডবীচহিবিসকাস, অটোগ্রাফট্রি, কোরাল উড, ডাম্বিয়া, ওসেজঅরেঞ্জ, অ্যাসট্রি আমেরিকান, কুইনাল, খিলখেজুর, হাতিবেল, বাওবাব, রুদ্রাক্ষ, চায়নাডল প্রভৃতি দুলর্ভগাছ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় চারশো প্রজাতির গাছ রোপণের মূল কারিগর বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ। তিনি বলেন, বিনুনি অর্থাৎ ঘোড়া চাবুক নামের এই গাছের দুটি চারা দুই বছর আগে সীমান্ত এলাকা থেকে ২ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। এই গাছের বয়স প্রায় দুই বছর। তিনি বলেন, এটি অতি দুর্লভ প্রজাতির গাছ। রংপুরে বৃক্ষ মেলায় এই গাছের একটি চারার দাম চাওয়া হয়েছিল ১০ হাজার টাকা।