ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবী টিম নিয়ে টেকনাফে অবস্থান করছেন রাউজানের ফারাজ করিম চৌধুরী। শনিবার (১৩ মে) বিকেল ৫টা ৩৪ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগের মধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘এখানে সাগরের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ।’
এর আগে দুপুর ৩টা ৫৭ মিনিটে ফারাজ লিখেছেন, ‘বাংলার মানুষের জন্য আপনি যদি অল্প কিছু করেন, তাহলে পুরো পৃথিবীটা আপনাকে এনে দিতে চাইবে। গতকাল রাতে ঢাকা থেকে টেকনাফ আসার পথে প্রায় ৩টি জায়গায় বিরতি দিয়ে চা, কফি ও পানি খেয়েছি। একটি জায়গায়ও জোর করে কাউকে খাবারের বিল দিতে পারি নি। তাদের কথা হচ্ছে, যেহেতু আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে যাচ্ছি, তারা আমাদের কাছ থেকে পয়সা নিবে না। আসলে এখানে পয়সাটা বড় বিষয় নয়, মানুষের আন্তরিকতা ও ভালবাসাটাই বড় বিষয়।’
তিনি আরও লিখেছেন,‘ বর্তমানে আমি টেকনাফের খুব কাছাকাছি। তবে আমার স্বেচ্ছাসেবী টিম গতকাল গভীর রাতেই সেখানে পৌঁছে গেছে। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে, সেখানকার স্থানীয় লোকজন যখন শুনেছে আমরা টেকনাফের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছি, তারা সাথে সাথে আমাদের সাথে যোগদান করেছে। আসলে বাংলাদেশের মানুষের দেশের প্রতি ভালবাসার কোন কমতি নেই। আপনারা সবাই আমাদের স্বেচ্ছাসেবীদের জন্য দোয়া করবেন।’
শনিবার (১৩ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. আসাদুর রহমান জানান, ‘ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিডরের মতোই শক্তিশালী মোখা। তবে সিডর দেশের মাঝ বরাবর দিয়ে গিয়েছিল। আর মোখা পাশ দিয়ে যাচ্ছে। উপকূলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মোখা গতি সঞ্চার করতে থাকবে। প্রায় সিডরের সমতুল্য গতিবেগ নিয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে মোখা।’
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় সিডর প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। ঝড়টি ভূমিতে আছড়ে পড়ার সময় প্রথম এক মিনিটে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার, যা একে সাফির-সিম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি-৫ এর সাইক্লোনে পরিণত করে। দমকা হাওয়ার বেগ উঠছিল ঘণ্টায় ৩০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। সিডরের প্রভাবে উপকূলে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।