এবার লেবাননের প্রতিরোধ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এক ইসরাইলি সেনা কমান্ডার নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার ২০ অক্টোবর রাতে সীমান্তে একটি ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ওই রিজার্ভ সেনা নিহত হন। এতে আরও দুজন আহত হয়েছেন। এর ফলে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ইসরাইলের দুই সেনা কর্মকর্তা নিহত হলেন।
এদিকে শনিবার (২১ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সেনা কমান্ডার নিহতের বিষয়টি জানিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদন মতে, ওই সেনার নাম ওমার বালভা। ২২ বছর বয়সী বালভা আলেক্সান্দ্রোনি ব্রিগেডের ৯২০৩তম ব্যাটালিয়নের একজন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বালভা ছিলেন ইসরাইলি-আমেরিকান নাগরিক। ইসরাইলি বাবা-মায়ের সন্তান হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের রকভিলে বড় হয়েছেন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, দিনের শুরুতেই ‘গাইডেড মিসাইল’ ও অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে ইসরাইলের আল-আসি ও হারমন চৌকিতে হামলা চালানো হয়েছে।
এর কিছুক্ষণ পরই প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি জানায়, ইসরাইলের হাউনিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় হিজবুল্লাহ দাবি করে, হামলায় ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে। এদিকে লেবাননের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা লেবানন সীমান্তের কাছে দখলদার ইসরাইলের সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে অন্তত ৩০টি মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে।
অন্যদিকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইসরাইলি ভূখণ্ডে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জবাবে লেবাননে হিজবুল্লাহর সামরিক স্থাপনায় সিরিজ হামলা চালিয়েছে তারা। শুক্রবার রাতে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লেবাননের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় এসব হামলা চালানো হয়।
হিজবুল্লাহ লেবাননের সবচেয়ে শক্তিশালী সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী। তাদের হাতে দূরপাল্লার রকেট রয়েছে, যা ইসরাইলি ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। ২০০৬ সালে ইসরাইলের সঙ্গে মাসব্যাপী যুদ্ধে তারা এসব ক্ষেণণাস্ত্র ব্যবহার করে। দুই সপ্তাহ আগে ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে।
মাত্র ৬০ লাখ জনসংখ্যার ছোট্ট দেশ লেবানন ইসরাইলের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত সহিংসতার কারণে অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে। এর মধ্যে আবার নতুন করে সংঘাতের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেখানকার মানুষ। হামাসের মতো হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদেরও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে। হামাস-ইসরাইল সংঘাত শুরুর পর থেকে ইসরাইলি বাহিনী ও হিজবুল্লাহর মধ্যে প্রায়শই সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।