এবার স্থল অভিযান না শুরু করলেও গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। এমন অবস্থায় কায়রোর শান্তি সম্মেলনে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই চলমান সংঘাতের সমাধান বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব এবং ইটালির প্রধানমন্ত্রী। গাজায় ইসরাইলের বোমা হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ৩৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এ নিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৮৫ জনে। নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। ১৬তম দিনে গড়িয়েছে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত। বিধ্বস্ত গাজার ধ্বংসস্তূপেই অব্যাহত রয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা ও বোমা বর্ষণ।
এদিকে গাজা ভূখণ্ডের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। হামলায় আহত ও দগ্ধদের ৮ শতাংশই শিশু। তবে চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট থাকায় ড্রেসিংসহ প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এরইমধ্যে আল-কুদস হাসপাতাল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল।
বিমান হামলায় সাধারণ গাজাবাসীর পাশাপাশি প্রাণ হারাচ্ছেন ওই এলাকায় কর্মরত সাহায্যকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরাও। এ পর্যন্ত সংঘাতে কমপক্ষে ২২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে ১৮ জন ফিলিস্তিনি, তিনজন ইসরায়েলি এবং একজন লেবাননের নাগরিক। অপরদিকে যুদ্ধের মধ্যে সাধারণ মানুষকে সহায়তা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
অবশেষে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়ার পর ২০টি ত্রাণবাহি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় এ ত্রাণ খুবই নগণ্য বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এছাড়াও কত সময় পর্যন্ত রাফা ক্রসিং খোলা থাকবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। কাতারের মধ্যস্থতায় প্রায় ২০০ জিম্মির মধ্যে দু’জন মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস।
তবে হামাসের কর্মকর্তা ওসামা হামদান লেবানন থেকে টেলিভিশনে সরাসরি সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত জিম্মি ইসরায়েলি সৈন্যদের মুক্তি দেওয়া হবে না। লেবানন থেকে ইসরায়েলের উপর বড় কোনো হামলার আশঙ্কায় গাজা উপত্যকার পাশাপাশি লেবানন সীমান্তেও যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল।
সেখানে সেনাবাহিনীর ঘাঁটি তৈরির পাশপাশি ভারী অস্ত্র এবং সাঁজোয়া যান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। লেবানন সীমান্তে থাকা সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ জানিয়েছে স্থল আক্রমণ শুরু করলে ইসরায়েলকে চরম মূল্য দিতে হবে। যুদ্ধ বন্ধে কায়রোতে শান্তি সম্মেলনে আরব নেতাদের পাশাপাশি অন্যান্য বিশ্ব নেতারাও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্মেলনে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই চলমান সংঘাতের সমাধান বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এবং ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। এরপর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে বৈঠক করতে তেল আবিব পৌঁছেছেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস শান্তি সম্মেলনে জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূখণ্ড ছেড়ে কোথাও যাবে না।