চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালে এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থী মো. সাইফুল আমিন শীর্ষের বিরুদ্ধে। রবিবার (৮ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষককে মারধরের সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, সাইফুল আমিন শীর্ষ পরীক্ষা চলাকালীন অসদুপায় অবলম্বন করছিল। সেই কাজে বাধা দেওয়ায় ওই শ্রেণিকক্ষে দায়িত্বরত বাংলা বিভাগের সহকারী শিক্ষকের দু’গালে চড় মেরে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান জেলা প্রশাসক ও সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মো. হাফিজুর রহমান আজ বিদ্যালয়ের ১১২নং কক্ষে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরীক্ষা চলাকালীন প্রভাতি শাখার দশম শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী মো. সাইফুল আমিন শীর্ষ পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় দায়িত্বরত শিক্ষক বাধা প্রদান করায় শিক্ষার্থী সাইফুল আমিন শীর্ষ ওই শিক্ষককে মারধর করে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, পরীক্ষার্থী সাইফুল আমিন শীর্ষ পরীক্ষা দেওয়ার সময় অসদুপায় অবলন্বন করলে তার খাতাটি দায়িত্বরত শিক্ষক কেড়ে নেয়। এরপর তাকে শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। সে সময় শিক্ষক তাকে দু’কাঁধ চাপ দিয় তার আসনে বসিয়ে দেয়। তারপর শিক্ষার্থী শীর্ষ নিজের আসন থেকে উঠে গিয়ে পিছনে হাত রেখে ওই শিক্ষকের মুখোমুখি দাঁড়ায়। সে সময় কথা বলার পরপরই সে শিক্ষকের দু’গালে ডান ও বাম হাত দিয়ে চড় মেরে পালিয়ে যায়। এরপর শিক্ষক খাতাটি নিয়ে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান বলেন, এ বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা। এ ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি থানায় অভিযোগপত্র দিতে পরামর্শ দেন। সেই মোতাবেক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহব্বুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেখানে এক শিক্ষককে মারধরের কথা বলা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষক কোনো অভিযোগ দেননি। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাদের লিখিত দিয়েছে। চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে কমিটি। প্রতিবেদন পেলে তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে। একাডেমিক বিষয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থা নেবে। দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত, পরবর্তী করণীয় ও বিষয়গুলো যেভাবে উঠে আসবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’