আরিফুল ইসলাম জিমন, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে চিকিৎসক ও নার্সের দায়িত্বের অবহেলায় রোগীর শরীরে ভুল গ্রুপের রক্ত পুশ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটেছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী রাসেল মিয়া বাদী হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার নূর-ই আজমীর ঝিলিক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাসেল মিয়ার স্ত্রী শহর বানু (২৪) কে শরীর দুর্বল ও রক্ত শূন্যতার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানোর পর চিকিৎসকের পরামর্শে রোগীর শরীরে রক্ত প্রদানের সিদ্ধান্ত হলে ওই রক্তের গ্রুপ খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরিচিত এক রক্তদাতা গত মঙ্গলবার হাসপাতাল সংলগ্ন ওয়েলকাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে এবি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত দিলে ওই রক্ত সংগ্রহ করে কর্তব্যরত নার্সকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রক্ত সংরক্ষণ করতে বলা হলে তিনি উক্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রক্ত রাখার পরামর্শ দেন। পরের দিন ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার রক্ত আনতে বললে বাদী অনেকটা অসুস্থ ও তার কোনো অক্ষর জ্ঞান না থাকায় রক্তের ব্যাগ এনে দিলে কর্তব্যরত নার্স ওই রক্তের গ্রুপ পুনরায় নির্ণয় না করেই এবি পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে বি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত রোগীর শরীরে পুশ করেন।
এমতাবস্থায় অর্ধেক রক্ত রোগীর শরীরে প্রবেশ করার পর বাদীর ছোট ভাই সোহেল রানা বিষয়টি লক্ষ্য করে নার্সকে বললে দায়িত্বরত নার্সরা তড়িঘড়ি করে ভুল গ্রুপের ওই রক্তের ব্যাগটি লুকিয়ে ফেলে। কিন্তু এর পূর্বেই রোগীর ভাই বিষয়টি মোবাইল ফোনে ধারণ করে ফেলেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী রাসেল মিয়া বলেন, ভুল গ্রুপের রক্ত পুশ করার কিছুক্ষণ পর রোগীর শরীরে চুলকানো সহ কোমরের ব্যথা শুরু হয়। আমি একজন অতি দরিদ্র ব্যক্তি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসা করা আমার পক্ষে অনেকটা অসম্ভব। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহ রোগীর উন্নত চিকিৎসার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। আমাদের এই ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রক্ত সালনের অনুমতি থাকলেও ক্রসম্যাচিং এর অনুমতি নেই। তাই অনুমোদন-কৃত প্রতিষ্ঠান হতে ক্রসম্যাচিং করা বাধ্যতামূলক। অভিযোগের বিষয়ে জানতে পেরেছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।