, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


কুষ্টিয়ায় গাছ চুরির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও মামলা নেয়নি পুলিশ

  • আপলোড সময় : ১২-০৯-২০২৩ ০২:৫৩:৫১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-০৯-২০২৩ ০২:৫৩:৫১ অপরাহ্ন
কুষ্টিয়ায় গাছ চুরির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও মামলা নেয়নি পুলিশ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: বিশ্ব উষ্ণায়ন ও পরিবেশ বিপর্যয় রুখতে সামাজিক বনায়ন বিভাগ গাছ রোপনে নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দূর্বৃত্ত চক্রের নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন চলছে সমানে পাল্লা দিয়ে। কুষ্টিয়া শহরতলীর কুমারগাড়া এলাকায় প্রভাবশালী দূর্বৃত্তচক্র কর্তৃক জিকে সেচ খালের দুই পাড়ের প্রায় অর্ধ সহস্রাধিক ফলজ ও বনজ গাছ চুরি করে নিধনের অভিযোগ উঠেছে। 

এঘটনায় সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড সরকারী গাছ চুরির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে  লিখিত অভিযোগ করেন কুষ্টিয়া মডেল থানায়। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ২০নং পৌর কাউন্সিলর ও সেচ-সম্প্রসারণ বিভাগের এক কর্মকর্তার ইন্ধনে সদর উপজেলার বড়িয়া গ্রামের আব্দুল খালেক ও কুমারগাড়া গামের সেলিম হোসেন অবৈধভাবে সরকারী এসব গাছ চুরির সাথে জড়িত।

 এবিষয়ে শত শত সরকরী গাছ চুরির অভিযোগে দুইজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেয়ার এক মাস পার হলেও কোন মামলা রেকর্ড বা জড়িত কাউকে গ্রেফতার করেনি  কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। এতে চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা সহ সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। অভিযোগটি তদন্ত  করে দেখছে বলে দাবি কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কুমারগাড়া বিসিকের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া জিকে টি-৫ কে সেচখালের দুই পাড়ের  ফলজ ও বনজসহ প্রায় সাড়ে ৬ শতাধিক গাছ চুরি করে নিধন করেছে স্থানীয় প্রভাবশলী মহল। গাছ নিধনে স্থানীয় ২০ নং পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এজাজুল হাকিমের ইন্ধনে আব্দুল খালেক ও সেলিম হোসেন নামে দুই ব্যক্তির  সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে। গাছ নিধনকারীরা সহজ ও স্বল্প সময়ে এসব গাছ কাটতে ব্যবহার করেছে বৈদ্যুতিক করাত।

কুমারগাড়া খালপাড়ার বাসিন্দা মামুন জানায়,  ‘কারেন্টের করাত দিয়ে এক সপ্তাহ ধরে এসব গাছ কেটে ট্রলি লোড করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যে। যারা এসব গাছ কাটছে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সাহস কারো নেই। খালের দুই পাড় থেকে অন্তত: ৬ থেকে ৭শ গাছ কেটেছে স্থানীয় চোরেরা। আপনারা লিখে কি করবেন ? ইতোমধ্যেই এসব ভাগাবাটা হয়ে গেছে পুলিশের সাথে।’

স্থানীয় যুবক সেলিম হোসেনের দাবি, ‘এই গাছ কাটার সিদ্ধান্তের সাথে আছে কাউন্সিলর এজাজুল হাকিম, সেচ খালের সেচ সভাপতি বড়িয়া গ্রামের আব্দুল খালেক এবং জিকে সেচ বিভাগের আফজাল হোসেন। তাদের নেতৃত্বেই গাছগুলি কাটা হয়েছে’।

তবে বাপাউবো কুষ্টিয়ার সহকারী সেচ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আফজাল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি সেখানে গিয়ে গাছ কাটতে দেখে তাদের জিজ্ঞাসা করি যে আপনারা খাল পরিষ্কার করার কথা গাছ কাটছেন কেনো ? তখন ওরা বলে কই আমরা তো গাছ কাটিনি, মেশিনে যে দুই একটি ডাল আটকে যাচ্ছে সেগুলি কেটে দিয়েছি’।

একই ভাবে গাছ কাটার সাথে কোন ভাবেই জড়িত নয় দাবি করে কুষ্টিয়া পৌরসভার ২০নং পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এজাজুল হাকিম বলেন,‘এইটার দায়িত্ব আমার না, এইটার সমিতি আছে, কে গাছ লাগাইছে, কে কাটেছে, এই সব বিষয় আমি জানিনা এবং আমার নেতৃত্বে গাছ কাটা হয়েছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা’

কুষ্টিয়া সামাজিক বনায়ন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন,‘পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে বনায়ন ও বৃক্ষ রোপনের কোন বিকল্প নেই। গতমাসের প্রথমদিকে কুমারগাড়া এলাকায় একটি সেচ খালের পাড় থেকে কে বা কারা অবৈধ ভাবে চুরি করে গাছ কাটার অভিযোগ এনে পানি উন্নয়ন বোর্ড লিখিত ভাবে মডেল থানাকে জানিয়েছে বলে শুনেছি’।

বাপাউবো কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান,‘স্থানীয় একটি দূর্বৃত্ত চক্র সেচ খালের উভয় পার থেকে বিভিন্ন জাতের গাছ কেটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পাওয়ায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে ০৬ আগষ্ট,২০২৩ তারিখে মডেল থানা পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি’। তবে ইতোমধ্যে একমাস পেরুলেও এঘটনায় মডেল থানা পুলিশ এখনও কোন মামলা রেকর্ড করেনি বলে শুনেছি’।

কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, ‘জিকে সেচ খালের পাড় থেকে সরকারী গাছ চুরির লিখিত অভিযোগটি ওসি অপারেশন পুলিশ পরিদর্শক দীপেন্দ্র নাথ সিংহ তদন্ত করছেন। উনি মামলার স্বাক্ষী দিতে কয়েকদিনের জন্য ষ্টেশনের বাহিরে থাকবেন। তবে এঘটনায় এখনও মামলা রেকর্ড বা গাছ চুরির অভিযোগে কাউকে আটক বা গ্রেফতার করেনি পুলিশ’।  
সর্বশেষ সংবাদ
নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র তত বৃদ্ধি পাবে: তারেক রহমান

নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র তত বৃদ্ধি পাবে: তারেক রহমান