অবশেষে আট দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি গবেষণারত তানজিলুর রহমানের মা আনিছা সিদ্দিকা। গতকাল সোমবার ২৮ আগস্ট খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান তার আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর সন্ধ্যায় খুলনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান। কারাগারের জেলার এনামুল হক বলেন, আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছলে তাকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে আনিছার পক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০ আগস্ট গ্রেফতারের পর ২২ আগস্ট প্রথম জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়েছিল। এরপর ২৪ আগস্টও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তরিকুল ইসলামের আদালত। ২৮ আগস্ট খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি কারাগার থেকে বিকালে মুক্তি পান।
জানা গেছে, খুলনা নগরীর খালিশপুর থানা পুলিশ গত ২০ আগস্ট নগরীর বয়রা এলাকার হাজী ফয়েজ উদ্দিন সড়কের ভাইয়ের বাড়ি থেকে আনিছাকে আটক করেছিল। তাকে ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করার সময় ধর্মীয় উগ্রপন্থি বইসহ আটক করা হয় বলে জানায় পুলিশ। ওই দিন খালিশপুর থানায় তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও খালিশপুর থানার এসআই রাকিবুল ইসলাম বলেন, গত ২০ আগস্ট দুপুরে নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাজি ফয়েজ উদ্দিন সড়কের সিদ্দিক হেলালের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানের সময় ঘটনাস্থল থেকে ধর্মীয় উগ্রপন্থি বই, পত্রিকা, ম্যাগাজিন, অন্তর্ঘাতমূলক ষড়যন্ত্রের কাজে ব্যবহৃত তিনটি ল্যাপটপ, পাসপোর্ট, চারটি মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়। তখন আনিছাসহ তিন জনকে আটক করে পুলিশ। পরে ছয় জনের নামে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন এসআই গোলাম মোস্তফা। খানজাহান আলী থানা এলাকা থেকে ওই মামলার আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে গ্রেফতারের পর আনিছার যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ছেলে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে অভিযোগ করেছিলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজায় সুখরঞ্জন বালির উপস্থিতি নিয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। পোস্টটি নানা জায়গা থেকে শেয়ার হয়। এর জেরে তার মাকে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে খালিশপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গিয়াস বলেছিলেন, ওই নারীর বাড়ি সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায়। পুলিশ খালিশপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়েছিল। তিনি সেখানকার সভায় উপস্থিত ছিলেন। ওই নারী পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করছিলেন। তার ছেলের ফেসবুকে পোস্টের বিষয়ে পুলিশ কিছু জানে না।