, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


জরিমানার টাকার অঙ্ক শুনেই জ্ঞান হারালেন মোটরসাইকেল চালক

  • আপলোড সময় : ২৩-০৮-২০২৩ ০৪:২৭:২৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৮-২০২৩ ০৪:২৭:২৪ অপরাহ্ন
জরিমানার টাকার অঙ্ক শুনেই জ্ঞান হারালেন মোটরসাইকেল চালক ছবি: সংগৃহীত
ট্রাফিক আইন অমান্য করলে জরিমানা গুণতে হয় যা কিনা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু অস্বাভাবিক ঘটনা হচ্ছে যদি সেই জরিমানার কথা শুনে কেউ অজ্ঞান হয়ে পরে যায়। ঠিক এমন একটি ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুরে জেলা শহরের মনোহর বাজার চৌরাস্তায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ওই মোটরসাইকেল চালক।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে যাত্রী নিয়ে শরীয়তপুর থেকে নাগেরপারা যাচ্ছিলেন মোটরসাইকেল চালক নেছার উদ্দিন। জেলা শহরের মনোহর বাজার চৌরাস্তার মোড়ে মটরসাইকেলের গতি রোধ করে ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই ফজলুল করিম। কাগজপত্র চেক করে ড্রইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ দেখতে পান ট্রাফিক পুলিশ অফিসরা।

এ সময় ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় তাকে মামলা করে ৫ হাজার টাকা জরিমানার রশিদ তুলে দেন ওই কর্মকর্তা। জরিমানার অঙ্ক দেখে মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যান নেছার উদ্দিন। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে কিস্তির চাপ থাকার পাশাপশি নিজেকে গরীব অসহায় দাবি করে জরিমানার টাকা কোথা থেকে আসবে এই চিন্তায় মাথা ঘুরে পড়ে যান বলে দাবি ওই মোটরসাইকেল চালকের।

মোটরসাইকেল চালক নেছার উদ্দিন জানান, বাবা-মা, স্ত্রী আর এক সন্তানের সংসারে আমিই একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি। কাজ না থাকায় কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনে যাত্রী পরিবহন করে যা আয় হয় তা দিয়ে কিস্তি পরিশোধ করি এবং সংসার চালাই। প্রতিমাসে ৮ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। প্রতিদিনের আয় থেকে সংসার চালিয়ে কিস্তির টাকা দিতে হিমশিম খেতে হয়। তার উপর ৫ হাজার টাকা জরিমানা কোথা থেকে আসবে? ট্রাফিক পুলিশের ওই স্যারকে অনেক অনুরোধ করেছি। আমার পক্ষে এত টাকা পরিাশোধ করা সম্ভব নয়।

বাবা-মাকে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। আমার সব কাগজপত্র ঠিক ছিলো শুধু ড্রইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ দুই মাস আগে শেষ হয়েছে। কিছু টাকা জোগাড় করে দ্রুত লাইসেন্স করে নেয়ার কথাও বলেছিলাম। কিন্তু সে কিছুই শুনতে চায়নি। ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে রশিদ ধরিয়ে দিয়েছে। এই টাকা আমার পক্ষে যেগাড় করা অসম্ভব। তাই জরিমানার টাকার চিন্তায় মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম।

ঘটনার প্রতক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম মিনার বলেন, পুলিশ মামলা দেয়ার পর মটরসাইকেল চালক অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পুলিশের সার্জন তাকে পানি কিনে এনে খাইয়ে দিয়েছে। এরপরও সে সুস্থ না হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সে সুস্থ হয়ে ফিরে আসে।

শরীয়তপুর সদর ট্রাফিক বিভাগের টিএসআই ফজলুল করিম বলেন, নেছার উদ্দিন নামের ওই মোটরসাইকেল চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। তাছাড়া তিনি মোটরসাইকেলে ২ জন যাত্রী পরিবহন করছিলেন। ট্রাফিক আইন অনুযায়ী তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অঙ্ক দেখে সে অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষণিক পানির ব্যবস্থা করে তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে এখান থেকে নিয়ে যায়।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শরিফ উর রহামান জানান, সোমবার বিকেলের দিকে এক মোটরসাইকেল চালককে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ সময় তার জ্ঞান ছিলো না, পরবর্তীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। জ্ঞান ফিরে এলে তার সহযোগীরা তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছে।
সর্বশেষ সংবাদ
চাকরিপ্রত্যাশীদের ১ বছর রাষ্ট্র থেকে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে:আমীর খসরু

চাকরিপ্রত্যাশীদের ১ বছর রাষ্ট্র থেকে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে:আমীর খসরু