‘প্রয়াত আফতাব উদ্দিন সুযোগ্য শিক্ষক ছিলেন। তার শিক্ষায় অনেকেই বড় মানুষ হয়েছে। তিনি ফিলোসফার (দার্শনিক) হেড মাস্টার ছিলেন। এমন শিক্ষক দেশে খুব কমই আছে। তিনি আমাদের রোল মডেল।’
শনিবার (১৯ আগস্ট) ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসানের বাবা, জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক মো. আফতাব উদ্দিনের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
আফতাব উদ্দিন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ধরেরবাড়ী মুসলিম হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে তিন বছর প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ধরেরবাড়ী মুসলিম হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বক্তারা বলেন, ‘স্কুল প্রতিষ্ঠার পর সব শিক্ষকই প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন। তার মধ্যে কেউ কেউ পথ দেখিয়েছেন। তাদের মধ্যে এক জন আফতাব উদ্দিন স্যার। তাকে দেখলে শ্রদ্ধাও যেমন আসত, আবার ভয়ও কাজ করত। আফতাব উদ্দিন স্যারের কাছে যে ভালোবাসা পেয়েছি, সেটি শুধু পিতা তার সন্তানকে দেয়।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘তার কাছ থেকে মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও দেশপ্রেম সম্পর্ক জানতে পেরেছি। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি খেলাধুলায় উৎসাহ দিতেন। শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় বিষয়েও অনুপ্রাণিত করতেন। তার মুখ এখনো অন্তরে ভেসে ওঠে। স্যার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মতিউর রহমান মন্টু। আলোচনা সভার উদ্বোধন করেন ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক এবং আফতাব উদ্দিন ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি এস এম জাহিদ হাসান। প্রধান আলোচক ছিলেন আফতাব উদ্দিনের ছাত্র সাবেক সচিব আজহার আলী তালুকদার।
ধরেরবাড়ী মুসলিম হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আফতাব উদ্দিনের ছাত্র সাবেক জেলা ডিআরও সিদ্দিক হোসেন, ধরেরবাড়ী মুসলিম হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল আহসান ও আবু হানিফ, আহম্মদ আলী মাস্টার, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, সাবেক শিক্ষক আমজাদ হোসেন।
আলোচনা শেষে মো. আফতাব উদ্দিনের আত্মার মাগফেরাত ও তার পরিবারের সকল সদস্যের মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গোসাই জোয়াইর এলাকায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
মো. আফতাব উদ্দিন ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৬১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধরেরবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ৪৩ বছর বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯৪ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন। টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষক সমিতির দুই বছর সভাপতি ছিলেন এবং নাগরপুর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৭ সালের ২১ আগস্ট তিনি মারা যান।