এবার আলোচনায় থাকলেও এশিয়া কাপের ১৭ জনের মূল স্কোয়াডের পাশাপাশি তিনজন স্ট্যান্ডবাই ক্রিকেটারের তালিকাতেও জায়গা হয়নি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। তাইজুল ইসলাম, সাইফ হাসান ও তানজিম হাসান তামিমের মূল দলে জায়গা না হলেও স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখা হয়েছে তাদের। আর তামিম ইকবাল তো আগেই ছিটকে গেছেন টুর্নামেন্ট থেকে।
এদিকে বাকিদের বাদ পড়ায় কোনো আলোচনা না হলেও রিয়াদের বাদ পড়ার পর শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। ডানহাতি এই ক্রিকেটারের ভক্তরা তো প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে বসেছিলেন রিয়াদকে দলে নিতে। রিয়াদ ভক্তদের রয়েছে অবশেষে বোর্ডের পক্ষ থেকে মিললো সুখবর। আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপে বোর্ডের পরিকল্পনায় রয়েছেন জাতীয় দলের ভরসাবান এই ব্যাটার। বিশ্বকাপের জন্য গড়া বিশেষ ক্যাম্পে ডাক পড়েছে ডানহাতি এই মিডল অর্ডারের।
আগামী ২০ আগস্ট থেকে এশিয়া কাপকে সামনে রেখে ক্যাম্প শুরু করবে বাংলাদেশ দল। এই ক্যাম্পের পাশাপাশি জাতীয় দলের আরও আট ক্রিকেটারকে নিয়ে বিশেষ ক্যাম্পের পরিকল্পনা রয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের। মূলত মূল দলের কেউ ইনজুরিতে পড়লে ব্যাকআপ প্রস্তুত রাখতেই এই পরিকল্পনা করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট ও হেড কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহে।
এদিকে মূল স্কোয়াডের কেউ ইনজুরিতে পড়লে প্রথমে ডাক পড়বে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে থাকা তিন জনের ভেতর থেকে। যদি স্ট্যান্ডবাই থেকে নেয়া না যায়, তবে বিশেষে বিকল্প হিসেবে আরও পাঁচ জনকে পাইপলাইনে রাখছে বোর্ড। যদিও এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া এই আট ক্রিকেটারের মূল লক্ষ্য নয়। মূলত বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই বিশেষ অবস্থায় পাইপলাইনে খেলোয়াড় প্রস্তুত রাখতেই এই ক্যাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড।
বিশেষ এই ক্যাম্পে থাকছেন তামিম ইকবাল। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের এই বিশেষ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রাখা হয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। এছাড়া আলোচনায় থাকলেও স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়া খালেদ আহমেদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও জাকির হাসানকে রাখা হয়েছে ৮ জনের তালিকায়। পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই হিসেবে থাকা তাইজুল ইসলাম, সাইফ হাসান ও তানজিম হাসান তামিম তো আছেনই। এই আটজন থাকবেন বোর্ডের বিশেষ নজরদারিতে।
আজ শনিবার ১৯ আগস্ট বোর্ডের এক পরিচালক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বোর্ডের প্রভাবশালী সেই পরিচালক বলেন, ‘তিনজনকে তো আমরা স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রেখেছিই। সেই সঙ্গে আরও পাঁচজনকে বিশেষ বিবেচনায় আনা হয়েছে। বিশ্বকাপের জন্য তাদের প্রস্তুত রাখা হবে। ক্যাম্পে দেখা হবে তাদের ফিটনেস, একাগ্রতা, ক্যাপাবিলিটি এইসবই। আর ক্রিকেটের সঙ্গে থাকার বিষয়টি তো আছেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু সবাই চুক্তিবদ্ধ, তাদের তো ক্রিকেটের মধ্যেই থাকতে হবে। দলের যে কোনো সময় যে কারো প্রয়োজন হতে পারে। সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। যেহেতু বিশ্বকাপ। আমাদের সেরাটা নিয়েই প্রস্তুতি নিয়ে সেখানে যেতে হবে।’
এশিয়া কাপ শুরুর আগের দিন দলগুলোকে প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণা করার শেষদিন বেধে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ১৫ জনের সেই প্রাথমিক স্কোয়াডে বিশ্বকাপ শুরুর এক সপ্তাহ আগ পর্যন্ত যে কোনো সময় আনা যাবে পরিবর্তন। পরেও আনা যাবে তবে সেক্ষেত্রে আইসিসির টেকনিক্যাল কমিটির অনুমোতি নিতে হবে।
বোর্ডের পরিকল্পনা মতে এশিয়া কাপ ও আসন্ন নিউজিল্যান্ড সিরিজে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স দেখে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করা হবে। আর সে কারণেই এশিয়া কাপের স্কোয়াডে না থাকলেও রিয়াদ, তাইজুল ও সৈকতের সামনে বিশ্বকাপের দলে জায়গা করে নেয়ার সম্ভাবনা এখনই শেষ হয়ে যায়নি বলে মনে করছেন বোর্ডের এই কর্তা। বিশ্বকাপের আগে পাওয়া সময়টাতে নিজেদের প্রমাণ করে দলে জায়গা করে নেয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে বোর্ডের সেই পরিচালকের ভাষ্যমতে, ‘দেখুন তামিমকে আমরা এশিয়া কাপে পাচ্ছি না, তো কি হয়েছে? বিশ্বকাপে তো ওকে আমরা পাচ্ছি। আমাদের রিয়াদ আছে, তাইজুল আছে; ওরা তো পরীক্ষিত। টিম ম্যানেজমেন্ট ও কোচ হয়তো এশিয়া কাপে তাদের দলের স্বার্থেই রাখেননি। তাই বলে কি ওদের বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনাই নেই?’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এখনও স্কোয়াড ঘোষণা হয়নি, এখনও যাচাই বাছাইয়ের সুযোগ আছে তাই ওদের যে সম্ভাবনা নেই খেলার সেটি কিন্তু বলা যাবে না। বিশ্বকাপ নিয়ে আমাদের পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ নেই। পূর্ণ প্রস্তুতি, আত্মবিশ্বাস ও এশিয়া কাপে পারফর্ম করতে পারলে দলে টিকে থাকা যাবে, নাহলে আমাদের বিকল্প ভাবতে হবে। আমি মনে করি ওদের বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি।’
ওয়ানডে বিশ্বকাপের মিশনে বিশেষ অনুশীলন ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ৮ ক্রিকেটার: তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাইজুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ, মোসাদ্দেক হোসেন, তানজিম হাসান তামিম, সাইফ হাসান ও জাকির হাসান।