এ সময় বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল, ছেলে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেছে, এবার ভালো চাকরি করে সংসারের হাল ধরবে। সেই অনুযায়ী সব চলছিলও ঠিকঠাক। ছেলেটির পড়াশোনা শেষ হতে না হতেই একটি তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) কোম্পানিতে মাসিক ১৪ হাজার রুপি বেতনে চাকরি জুটে যায়। তবে সেই বেতনে সংসার চললেও বিলাসিতা হতো না।
তাই দ্রুত বড়লোক হওয়ার নেশায় নজর যায় চুরিবিদ্যায়। আর সেই লোভই কাল হলো তার। শেষমেষ পুলিশের জালে ফেঁসেছেন যুবক। জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা আব্দুল রহমান মোল্লা। বয়স ২৬ বছর। আইটি কোম্পানির চাকরি ছেড়ে মোবাইল চুরি শুরু করেছিলেন তিনি।
সেটিও বেশ ভালোভাবেই রপ্ত করেছিলেন। কিন্তু এক ব্যক্তির আইফোন চুরি করেই ফেঁসে যান আব্দুল।সেই ফোনে ট্র্যাকার লাগানো ছিল। সেটি ট্র্যাক করতে গিয়েই আব্দুলের খোঁজ পান আসল মালিক। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি থানায় জানান। এরপর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সাইবার সেলের কর্মকর্তাদের জালে ধরা পড়েন আব্দুল।
পুলিশ আব্দুলের বাাড়ি থেকে ৩৪টি চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে। তার মধ্যে চারটি আইফোনও ছিল। জেরার মুখে সব অপরাধ স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত যুবক। আব্দুল রহমান মোল্লা পুলিশকে জানিয়েছেন, মোবাইল সারাতে গিয়ে একটি দোকানের মালিক তাকে ফোন সরবরাহের প্রস্তাব দেন। বিনিময়ে মোবাইলপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ রুপি দেওয়ার লোভ দেখানো হয়।
সেই লোভে অনলাইনে কম দামে মোবাইল কিনতে শুরু করেছিলেন আব্দুল। তারপর আরও লাভের আশায় মোবাইল চোরদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেন। তাদের কাছ থেকে কম দামে মোবাইল ফোন কিনে দোকানটিতে বিক্রি করতেন তিনি।
কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না এ যুবক। আরও বেশি লাভের আশায় নিজেই নেমে পড়ে মোবাইল চুরির কাজে। প্রায় দু’বছর ধরে মোবাইল চুরি করছিলেন তিনি। তার প্রধান টার্গেট ছিল বাস-ট্রেন বা অন্য ভিড়যুক্ত এলাকাগুলোতে।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, আব্দুল চুরি করা মোবাইল ফোনগুলো বাংলাদেশে পাচারের জন্য সংযোগও তৈরি করে ফেলেছিলেন। আইফোন পাচার করতে পারলে তাকে ১০ হাজার রুপি দেওয়া হতো। সাধারণ ফোন হলে পেতেন ৩০০ থেকে ৫০০ রুপি। তার সঙ্গে মোবাইল চুরির এই কাজে আর কে কে জড়িত এবং কোনো গোপন ডেরা রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।