, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪ , ২৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে ফেরত!

  • আপলোড সময় : ১৫-০৮-২০২৩ ১১:০৯:১৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০৮-২০২৩ ১১:০৯:১৬ পূর্বাহ্ন
তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে ফেরত!
আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট থেকে: টানা দু'দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত পানি প্রবাহে তিস্তার ভাটিতে প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দির দুর্ভোগে পড়েছে। তবে গতকাল সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুর থেকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ কমতে শুরু করছে। 

জানা গেছে, রোববার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় বিপদ সীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার (১৪ আগষ্ট) সকাল ৬ টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২.৩৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদ সীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরে সকাল ৯ টার পরিমাপে পানিপ্রবাহ একই পয়েন্টে রেকর্ড করা হয় ৫২.২৯ মিটার। যা বিপদ সীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপরে ছিলো। আবার বেলা ১২টার পরিমাপে পানির সমতল ওই পয়েন্টে রেকর্ড করা হয় ৫২.১৫ মিটার, এসময় তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বিপদ সীমার ০ সেন্টিমিটার উপরে ছিলো বলে জানিয়েছে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাট সদর উপজেলা সহ আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় আবারো বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার পরিবার। সেই সাথে চরম বিপাকে পড়েছে গবাদি পশু-পাখি আর মৎস্য খামারিরাও। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ পানি প্রবাহে নতুন নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

পানিবন্দি পরিবার গুলোর মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। নদীপাড়ের অধিকাংশ পরিবারের সুপেয় পানির টিউবওয়েল পানির নিচে ডুবে গেছে। মাচাং বানিয়ে তাতে রান্না করছেন নারীরা। এক বেলা রান্না করে চালিয়ে নিচ্ছেন ২/৩ বেলা। মাচাংয়ের ওপর পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিস্তা পাড়ের পানিবন্দি পরিবারগুলো। 

সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা বাজার এলাকার বাসিন্দা আবদুল বাতেন (৫৫) বলেন, আমরা তিস্তা নদীর একেবারে কাছাকাছি যারা বসবাস করে আসছি তারা সরকারের বড় কর্মকর্তাদের আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাইনা। ৭-৮ বার বাড়ি সরিয়েছি এই নদীর ভাঙ্গনের জন্য। এখন বন্যার পানি নামতে না নামতেই আবারও বাড়ি তলিয়েছে।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা এলাকার এলাহী বকস বলেন, গত দুই দিনের বৃষ্টিতে পানি বাড়ছে। এতে কারও কারও ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। গবাদি পশুপাখি আর শিশু বৃদ্ধদের নিয়ে উঁচু স্থানে এসেছি। রাত হলে আবার মাচাংয়ের ওপরে বসে বসে রাত কাটাতে হচ্ছে। 

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা'র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, পানির সমতল বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। ব্যারাজের জলকপাট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। নদী তীরের আশপাশের কিছু বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যা বলেন, তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে জেলার ৫ উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে সরকারি চাল ও নগদ টাকা পানিবন্দি পরিবারের জন্য দেওয়া হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুতি রয়েছি।
সর্বশেষ সংবাদ
শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করতে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে আইজিপিকে চিঠি

শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করতে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে আইজিপিকে চিঠি