মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, চকরিয়া থেকে: হত্যা সহ ডাকাতি মামলায় কক্সবাজার-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম সহ ১০ জন আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল সোমবার (২৪ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন। একই আদালতের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
রায় ঘোষণার সময় সংসদ সদস্য জাফর আলম সহ ৯ আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্র পক্ষে পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম, আসামী জাফর আলমের পক্ষে অ্যাডভোকেট আবু সালাম, অন্যান্য আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান মামলটি পরিচালনা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০০১ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজারের চকরিয়ার কাকরা ইউনিয়নের চিরিঙ্গা-মানিকপুর সড়কে মানিকপুর ঢালায় একদল সশস্ত্র ডাকাত পর পর ২ টি যাত্রীবাহী জীপে ডাকাতি করে এবং জীপের হেলাপার, একই উপজেলার মাঝের ফাঁড়ির মোহাম্মদ ইসমাইল এর পুত্র রুহুল আমিন (১৫) কে গুলিকরে হত্যা করে।
এ ঘটনায় জীপের ড্রাইভার, চকরিয়ার কাকরা মাঝেরফাঁড়ির ওসমান গণি’র পুত্র আশরাফুল ইসলাম প্রকাশ টিটু বাদি হয়ে ১৮৬০ সালের ফৌজদারী দন্ড বিধির ৩৯৬/৪১২ ধারায় অভিযোগ এনে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার চকরিয়া থানা মামলা নম্বর : ৫(১১)/২০০১ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৩৯০/২০০১ ইংরেজি (চকরিয়া) এবং এসটি মামলা নম্বর : ১১১/২০০৩ ইংরেজি।
বিচার ও রায় :
মামলাটি তদন্ত করে কক্সবাজার-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ এনে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন। মামলাটি ২০০৩ সালের ১৮ আগস্ট চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, সাক্ষীদের আসামী পক্ষে জেরা, সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট যাচাই, আলামত পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মামলাটি রায়ের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন। রায় ঘোষণার দিনে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে না পারায় বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য আসামী জাফর আলম সহ সকল আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত আসামীরা হলো : কফিল উদ্দিন, মো: হাছান প্র: হাছু, নুরুল ইসলাম, জিয়াবুল হক প্র: মানিক্যা ডাকাত, জাফর আলম প্রঃ বাইট্টা জাফর, কালা মনু, এ.কে খান, নুরুল হক, হাসান আলী এবং হাছান আলী’র পুত্র জাফর আলম। আসামীরা সকলে চকরিয়ার পালাকাটা গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার দীর্ঘ ২২ বছর পর বিচারিক কার্যক্রম শেষে সোমবার মামলাটি রায় ঘোষণা করা হয়।