এবার ভারতের মুম্বাই থেকে চিকিৎসা করিয়ে কলকাতায় ফেরার পথে চলন্ত ট্রেনের মধ্যে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন এক বাংলাদেশি নারী। জানা গিয়েছে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা ওই বাংলাদেশি নারীর নাম মঞ্জিলা খাতুন । তিনি তার স্বামী রেজাউল করিমের সঙ্গে শনিবার চিকিৎসা শেষে ডাউন মুম্বাই মেলে হাওড়া উদ্দেশ্যে আসছিলেন।
ট্রেনটি সকাল ৯ টা ৩০ নাগাদ মেচেদা সেশানে ঢোকার মুখেই মঞ্জিলা খাতুনের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। এরপর ট্রেনেই মধ্যে সন্তান প্রসব করেন ওই নারী। এ বিষয়ে হাওড়া ডিভিশন সূত্রে জানানো হয় ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে দক্ষিণ পূর্ব রেলের মেচেদা স্টেশনে। যদিও পরে রেল কর্তৃপক্ষ রেল পুলিশ ও প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের তৎপরতায় মা ও সদ্যোজাতকে বাগনানের একটি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়।
পরে তাদের কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর মা ও শিশু সুস্থ আছে। ট্রেনের যাত্রীরা জানায় মুম্বাই থেকে ছেড়ে শনিবার ওই ট্রেনটি হাওড়ার দিকে আসছিল। ট্রেনের এস থ্রি কোচে ছিলেন বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ছাপড়া থানার আসায়নি এলাকার রেজাউল গাজী ও মঞ্জিলা খাতুন নামে এক দম্পতি।
ট্রেনটি দক্ষিণ পূর্ব রেলপথের মেছেদা স্টেশনে আসার সময় হঠাৎ মঞ্জিলার প্রসব বেদনা শুরু হয়। ট্রেনের মধ্যে সদ্যোজাত ও ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই সহযাত্রীরা টিকিট পরীক্ষক কে বিষয়টি জানানো হয়। এরপরেই রেল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে তৎপরতা শুরু হয়। রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বাগনান স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তৎপর হয়ে উঠে রেলপুলিশ জিআরপি ও রেলকর্মীরা।
দক্ষিণ পূর্ব রেলের প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের এর পক্ষ থেকে স্টেশন সংলগ্ন এলাকার একটি নার্সিংহোমের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়। বাগনান স্টেশনের বাইরে অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়। নির্ধারিত স্টপেজ না থাকলেও মুম্বাই মেলকে দাড় করানো হয় বাগনান স্টেশনে। এরপরেই মা ও সন্তানকে দ্রুত নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানেই দুজনের চিকিৎসা করার পর তাদেরকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের চিকিৎসক জুলকারনাইন বলেন মা ও তার সদ্যোজাত কন্যাসন্তান ভালো আছে। তবে এটি প্রিম্যাচিউর বেবি। শিশুটির ওজন ১ কেজি ৩০০ গ্রাম।
আরেক চিকিৎসক সেখ সরিফুল বলেন, যেহেতু প্রিম্যাচিউর বেবি তাই আপাতত তাকে স্পেশাল কেয়ারে রাখা হয়েছে এবং শিশুটির মাকে স্যালাইন দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছে। এই অবস্থায় কলকাতায় ভালো হাসপাতালে তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকাতায় স্থানান্তর করা হয় তাদের। এজন্য প্যাসেঞ্জার্স অ্যসোসিয়েশন ও রেল পুলিশ তাদের অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে।
মঞ্জিলার স্বামী রেজাউল বলেন ইতিমধ্যে এই দেশে (ভারতে) তাদের এক আত্মীয় আছেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তার পাশে থাকার জন্য আপাতত তারা আসছেন। অন্যদিকে দক্ষিণ পূর্ব রেলের প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অজয় দলুই জানান এই ধরনের কাজ করতে পেরে আমাদের ভালো লাগছে।