জয়নাল আবেদীন,বেনাপোল থেকে: দীর্ঘ ১২ বছর পর অনুষ্ঠিত যশোরের বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নাসির উদ্দীন বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। নাসির উদ্দীন ১৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল প্রতিক পেয়েছেন ৩ হাজার ৮২৫ ভোট। সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৯৮টি। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ১৭হাজার ৫২১টি। মোট ৫৭ দশমিক ৯১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নিশ্চিত করেন, রিটানিং অফিসার ও যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো: আনিছুর রহমান।
এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন ১ নং ওয়ার্ডে সুলতান আহমেদ বাবু, ২ নং ওয়ার্ডে শরিফুল ইসলাম, ৩ নং ওয়ার্ডে মিজানুর রহমান রমজান, ৪ নং ওয়ার্ডে মো: শাহিন, ৫ নং ওয়ার্ডে আজিম উদ্দিন গাজী, ৬ নং ওয়ার্ডে আসাদুর রহমান আসাদ, ৭ নং ওয়ার্ডে মজনুর রহমান নুপুর, ৮নং ওয়ার্ডে হাসানুর রহমান তাজিন ও ৯নং ওয়ার্ডে কামাল হোসেন।
সংরক্ষিত ৯টি ওয়ার্ডের ৩জন নির্বাচিত মহিলা কাউন্সিলরা হলেন, ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে জুলেখা বেগম, ৪,৫,ও ৬ নং ওয়ার্ডে মর্জিনা খাতুন মিম এবং ৭, ৮, ও ৯ নং ওয়ার্ডে কামরুন্নাহার আন্না। নির্বাচনে মেয়র পদে দুই জন প্রার্থী, সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৪৭ জন প্রার্থী ও সংরক্ষিত ৩টি মহিলা আসনে ১৫ জনসহ মোট ৬৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোট কেন্দ্রের বাইরে দুই একটি অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিপুল সংখ্যক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনের কঠোর নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মত।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় পর্যন্ত ১২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক। তবে দুপুরের পর ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী পৌর স্বেচ্ছাসেবক-লীগের সভাপতি জুলফিকার আলী মন্টুকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে প্রতিপক্ষরা। এর আগে একই ভোট কেন্দ্রে সাবেক মেয়র জেলা আওয়ামীয়ের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটনকে লাঞ্ছিত করে প্রতিপক্ষরা।
বেনাপোল পৌর সভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজার ৩৮৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ১৫ হাজার ৪৪ জন এবং মহিলা ভোটার রয়েছে ১৫ হাজার ৩৪১ জন। তবে, ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়ায় কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়েছে ধীরগতিতে বলে অভিযোগ ভোটারদের। ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ উৎসবমুখর শান্তিপূর্ণ ছিল। ভোট কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
নির্বাচনে মেয়র পদে মোবাইল ফোন প্রতীকের স্বতন্ত্র পরাজিত মেয়র প্রার্থী মফিজুর রহমান সজন অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসীরা বাইরের এলাকা থেকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে মহড়া দিয়েছে। তারা ভীতির সঞ্চার করেছে। কেন্দ্রগুলো থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত বিজয়ী নৌকার প্রার্থী নাসির উদ্দীন বলেন, অভিযোগকারী স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অপকৌশল। আমার প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকান্ডে পৌরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।