ঠাকুরগাঁওয়ে নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতা ইউসুফ আলিসহ ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গত শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ভুক্তভোগী কিশোরীর মা এই মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাবা ইউসুফ আলিসহ অন্যান্য আসামিরা পলাতক রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি । তবে ইউপি চেয়ারম্যান রইস উদ্দিন সাজুকে মামলা থেকে আড়াল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সূত্র জানায়, সদর উপজেলা গড়েয়া ইউনিয়নের খামার ভোপলা গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ আলি তার স্ত্রীকে বিভিন্ন অজুহাতে মারপিট করে বাপের বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য করতেন। কয়েকমাস পূর্বে স্ত্রীর পা আগুনে পুড়ে গেলে তিনি দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ওই সময় বাড়িতে তার কিশোরী মেয়ে একা থাকার সুযোগে ইউসুফ আলি তাকে কৌশলে ধর্ষণ করে। এভাবে মেয়েকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। একপর্যায়ে ওই কিশোরী অন্তঃ সত্ত্বা হয়ে গেলে সে তার মাকে বিষয়টি অবগত করে। পরে স্থানীয় গড়েয়া ইউপি চেয়ারম্যান রইস উদ্দিন সাজু ও ইউপি সদস্য গোলাপকে বিষয়টি অবগত করলে তারা ওই কিশোরীকে গোপনে শহরের ‘আমাদের হাসপাতাল’ নামে একটি ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত করান।
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে চেয়ারম্যান রইস উদ্দিন সাজু ও ইউপি সদস্য গোলাপ গ্রাম্য সালিশের ব্যবস্থা করার পরও না বসায় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী চেয়ারম্যান সহ দোষীদের বিচার দাবি করে গত শুক্রবার ৩ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত গড়েয়া ইউপি চেয়ারম্যান রইস উদ্দিন সাজু বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা এবং ওই কিশোরীর গর্ভপাতের ব্যবস্থা করলেও অদৃশ্য কারনে তাকে মামলা থেকে আড়াল করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেফতারের স্বার্থে এজাহার-ভুক্তদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। শনিবার ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগী কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং বর্তমানে সে সেফ হোমে রয়েছে।
এ ঘটনায় কাউকে আড়াল না করে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা সহ বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।