এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের মধ্যেই ভারত নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকারকে সম্মান না দিলে ভারত ‘ভেঙে যাওয়ার’ ঝুঁকি রয়েছে। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় মুসলমানদের অবজ্ঞার এ সম্ভাব্য পরিণতির কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক আলোচিত প্রেসিডেন্ট ওবামা।আজ শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে এ কথা বলা হয়েছে।
এদিকে বারাক ওবামার এমন মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন। এতে বাইডেন বলেন, হোয়াইট হাউজে আলোচনার সময় মোদির সঙ্গে মানবাধিকার ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘ডিএনএতে’ গণতন্ত্র মিশে রয়েছে।
আর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দাবি করেন, তার সরকারের অধীনে ভারতে সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হয় না। ভারতে ধর্মীয় বৈষম্যের অস্তিত্ব রয়েছে তা মানতে নারাজ তিনি। যদিও ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিকদের নির্যাতনের বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ সামনে এনেছে বহু মানবাধিকার গোষ্ঠী ও খোদ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
এদিকে সিএনএনের বরাতে এনডিটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওবামা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমি ভালো করেই জানি। আমি যদি এখন তার সঙ্গে দেখা করতাম তাহলে তাকে বলতাম, আপনি ভারতে জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা না করতে পারলে ভারত টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বৈঠক প্রসঙ্গে ওবামা বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উচিত মোদির কাছে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে মুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি উত্থাপিত করা। তবে এটাও ঠিক যে, মিত্র দেশগুলোর মানবাধিকার ইস্যুতে কথা বলাটা বেশ ‘জটিল’।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ডেমোক্রেটিক দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, বারাক ওবামাও একই দল থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালে প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বেশ কয়েকবারই দেশটিতে সফরে গেছেন।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণের কারণে মোদির এ সফরটি যুক্তরাষ্ট্রে তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর বলে বিবেচিত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সফরের শুরুতেই মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মোদি। এমনকি, তার মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি লিখেছেন ৭৫ জন মার্কিন আইনপ্রণেতা।