প্রায় ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন সঞ্চয় নিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া পর্যটকবাহী সাবমেরিন ‘টাইটান’। গত রোববার (১৮ জুন) আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ হয় সেটি। ফলে, বৃহস্পতিবার সকালেই সাবমেরিনটিতে অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার কথা। সেই হিসাবে, আর বড়জোর কয়েক ঘণ্টার অক্সিজেন রয়েছে টাইটানে। এই সময় পেরিয়ে গেলে ভেতরে থাকা পর্যটকদের জীবিত উদ্ধারের আশা প্রায় শেষই হয়ে যাবে।
এর আগে, গত বুধবার মার্কিন কোস্ট গার্ড জানায়, সমুদ্র তলদেশ থেকে কোনো কিছুর শব্দ শুনতে পেয়েছে তারা। শব্দটি অনেকটা ধাতব কোনো বস্তুর ওপর সজোরে আঘাত করার মতো। এই খবরে টাইটানের খোঁজ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে ওঠেন সবাই। তাতে উদ্ধার অভিযান আরও জোরালো করা হয়।
ওসিনগেট কোম্পানির সাবমেরিনটির খোঁজে সমুদ্রপৃষ্ঠে যে বিশাল এলাকাজুড়ে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে, সেটির আকার এখন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের দ্বিগুণ। অনুসন্ধান চলছে সমুদ্রের চার কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত। মার্কিন বাহিনীর পাশাপাশি অভিযানে যোগ দিয়েছে রয়্যাল কানাডিয়ান এয়ারফোর্সের প্লেনও।
পাঠানো হয় আরও জাহাজ এবং রোবটিক্যালি অপারেটেড ভেহিকল (আরওভি)। মার্কিন কোস্ট গার্ড বুধবারও বলেছিল, তারা নিখোঁজ পাঁচ পর্যটককে জীবিত উদ্ধারের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে বৃহস্পতিবার সেই আশা অনেকটাই ম্লান হয়ে এসেছে। মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক পারমাণবিক সাবমেরিন কমান্ডার ডেভিড মার্কুয়েট বলেছেন, সমুদ্র তলদেশ থেকে পাওয়া যে শব্দে আশার সঞ্চার হয়েছিল, সেটি টাইটান সাবমেরিন থেকে থেকে না-ও আসতে পারে।
তিনি বিবিসি’কে বলেন, এটি প্রাকৃতিক শব্দও হতে পারে। আমরা শব্দ শুনতে পাচ্ছি, এরপর জাহাজ এলাকায় আসছে এবং তারপরে আমরা আরও শব্দ শুনতে পাচ্ছি। আমার মনে হয় না, এটি একটি কাকতালীয় ঘটনা।
ক্যাপ্টেন মারকুয়েট বিশ্বাস করেন, সাবমেরিনের আরোহীদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা কম। কিন্তু সেটি কিছুটা হলেও বেড়েছে। কারণ টাইটানকে টেনে তুলতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ওই এলাকায় পৌঁছানোর পথে। তবে তার আগে সাবমেরিনটি খুঁজে পাওয়া জরুরি বলে জানিয়েছেন তিনি। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন