ঠাকুরগাঁওয়ে চাঞ্চল্যকর মাদক মামলায় পুলিশের বরখাস্তকৃত এস আই হেলাল উদ্দীন প্রমানিক (৪২) সহ ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ এবং ১২ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করেছে আদালত। বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সিনিয়র দায়রা জজ মামুনুর রশিদ এ রায় প্রদান করেন। অপর ধারায় উল্লেখিত ২ আসামীর ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানাও প্রদান করেন তিনি। এছাড়াও এ মামলায় অপর আসামী মাসুদ রানা কে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। হেলাল উদ্দীন প্রমানিক নওগাঁ জেলার দরিয়াপুর গ্রামের মৃত জগি প্রামানিকের ছেলে বলে জানাযায়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ জুন ঠাকুরগাঁও ডিবি পুলিশের সাধারণ ডায়েরী নং-১৮৫ এর প্রেক্ষিতে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় পীরগঞ্জ থানার সেনুয়া বাজারে অবস্থানকালে গোপন সংবাদের মাধ্যমে ডিবি পুলিশের টিম জানতে পারে, পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পুরাতন ডাক বাংলোর আঙ্গিনায় ৩ জন লোক মাদকদ্রব্য (ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজা) বিক্রির উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ডিবি পুলিশের টিমটি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তৎকালীন পীরগঞ্জ থানার পুলিশের এসআই হেলাল উদ্দীন প্রমানিক (৪২) কে নীল রংয়ের পলিথিন ব্যাগ ধরে রাখা অবস্থায় আটক করা হয়। পরে নীল রংয়ের ব্যাগটি থেকে মোট ৫ হাজার পিস ও অপর আসামী মানিক দাসের দেহ তল্লাসী করে ৩ হাজার সহ মোট ৮ হাজার পিস মাদকদ্রব্য (ইয়াবা ট্যাবলেট) ও নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে হেলাল উদ্দীন প্রামানিকের দেওয়া তথ্য মতে তার বাড়ির শয়ন ঘরের খাটের নিচ থেকে ২ কেজি গাঁজাও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই ডিবি পুলিশের এসআই (নি:) রুপ কুমার সরকার বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে পীরগঞ্জ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
দীর্ঘদিন বিচারান্তে অবশেষে মামলার প্রথম আসামী তৎকালীন পীরগঞ্জ থানার এসআই নওগাঁ জেলার দরিয়াপুর গ্রামের মৃত জগি প্রামানিকের ছেলে হেলাল উদ্দীন প্রমানিক (৪২) ও মামলার দ্বিতীয় আসামী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার মন্ডলাদাম গ্রামের মৃত বাদল দাসের ছেলে মানিক দাস (৩৫) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ ও ১২ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করে আদালত। মামলার রায় প্রদানের সময় মানিক দাস পলাতক ছিলেন। এ ঘটনায় আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত না হওয়ায় মামলার ৩ নং আসামী মো: মাসুদ রানা (২৮) কে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী ছিলেন ঠাকুরগাঁও পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাড. শেখর কুমার রায়। অপরদিকে আসামীপক্ষে ছিলেন এ্যাড. রফিজ উদ্দিনসহ কয়েকজন আইনজীবী।