এখন ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। জামাল ভুঁইয়াদের অবস্থান যেখানে ১৮৫, সেখানে ভারতের ১২৬। কিন্তু দুই দলের মাঠের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশই। কিন্তু ৫৯ ধাপ পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের বিপক্ষে ড্র কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না ভারত। বিশ্লেষকরা তো বটেই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুনীল ছেত্রীদের রীতিমত ধুয়ে দিচ্ছে দেশটির সাধারণ দর্শকরাও। তবে দাপুটে পারফরম্যান্সের পরও বাংলাদেশ দলকে নিয়ে তেমন কোনো প্রশংসা নেই তাদের পোস্টে।
গত মঙ্গলবার শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটিতে চোখ ছিল গোটা ভারতের কোটি ফুটবলপ্রেমীর। ম্যাচের আগে হম্বিতম্বি, বাংলাদেশ দল নিয়ে তাচ্ছিল্য আর র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকার দম্ভ সবই দেখিয়েছে তারা। কিন্তু নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের সামনে একরকম আত্মসমর্পণই করেছিল ভারত। জনি-ইমনরা সহজ সুযোগগুলো হেলায় না হারালে বেঙ্গল টাইগার্সের কাছে লজ্জাই পেতে হতো ইন্ডিয়ানদের।
জনসংখ্যা-আয়তন-বাজেট-স্ট্রাকচার-শক্তিমত্তা সবকিছুতে যোজন যোজন এগিয়ে থেকেও তুলনামূলক ছোট প্রতিবেশির কাছে এমন নাস্তানাবুদ হওয়া মানতেই পারছে না ভারতীয়রা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা টের পাওয়া যায় স্পষ্ট। কোচ মানোলো মার্কুয়েজের কৌশল, সামর্থ্য নিয়েও তুলছে প্রশ্ন। তবে, বাংলাদেশ দল নিয়ে এখনও কেনো যেনো প্রশংসা করতে পারছে না তারা। এক হামজা চৌধুরী ছাড়া কাউকেই গোনায় ধরছে না যেন।
এদিকে লাল-সবুজের জার্সিতে নিজের অভিষেকেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন হামজা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে ব্লুজরা। শেফিল্ড ইউনাইটেড তারকার খেলার ধরণ কারোর এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু, সার্বিকভাবে বাংলাদেশ দলের উন্নতি নিয়ে কথা বলতে এখনও কার্পণ্য ভারতীয়দের। ব্যাপারটা এমন যে, কেবল নিজেদের ভুলেই জিততে পারেনি তারা। বাংলাদেশের খুব একটা ক্রেডিট নেই।
বাংলাদেশ অবশ্য ওসব নিয়ে ভাবছে না। ক্রীড়াঙ্গনসহ নানা ক্ষেত্রে ভারতের বঞ্চনার শিকার দেশের মানুষের মাঝে ভারতকে নিয়ে তিক্ততা এখন চরমে। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে তাদের মাটিতে হামজাদের দাপুটে পারফরম্যান্স তাই আলাদা এক প্রশান্তি এনে দিয়েছে এদেশের মানুষের মনে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল নিজেদের খেলার মান উন্নয়নে এগিয়ে চলুক, এমনটাই আশা এদেশের আপামর ক্রীড়া অনুরাগীর।