‘আমি বিশ্বাস করি না জামায়াতে ইসলাম কখনো ক্ষমতায় আসবে’-টকশোতে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে দুঃখ প্রকাশ করেছেন জুলাই শক্তি নিয়ে নতুন প্ল্যাটফর্মের অন্যতম উদ্যোক্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি রাফে সালমান রিফাত। গতকাল সোমবার (১৭ মার্চ) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে এই মন্তব্য করেন রিফাত। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জামায়াতপন্থিদের সমালোচনার মুখে পড়ে মঙ্গলবার সকালে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে ক্ষমা চান রাফে সালমান রিফাত।
কোনো দল ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠলে নতুন প্ল্যাটফর্মটি তাদেরই সমালোচনা করবে টকশোতে এই মন্তব্য করে গিয়ে রাফে সালমান রিফাত বলেন, এখানে যেই ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে চায় আমরা তারই সমালোচনা করবো। এমনকি এনসিপিও যদি ক্ষমতায় গিয়ে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে অথবা বিএনপি বা জামায়াতও ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবো। এ সময় শিবিরের সাবেক এই নেতা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলেন, ‘যদিও আমি বিশ্বাস করি না যে জামায়াতে ইসলাম কখনো ক্ষমতায় যেতে পারবে’।
রাফে সালমান রিফাতের এই বক্তব্যের ভিডিও মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে ফেসবুকে জামায়াতপন্থিদের বুলিংয়েরও শিকার হন তিনি। এমন প্রেক্ষাপটে সকালে দুঃখ প্রকাশ করে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘গতকাল মিডিয়ায় আমার এক টকশোতে আমি জামায়াতে ইসলামী নিয়ে একটি আনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করেছি। এই মন্তব্যটি অপ্রয়োজনীয় ছিলো এবং বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের জন্য অসম্মানজনকও ছিল। এই ভুলবশত করা মন্তব্য এবং জেশ্চারের জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের বড় দুইটা রাজনৈতিক দল। আগামী দিনে এই দুটো দল বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা এবং উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। অতীতের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার করা জনমত জরিপেও বিএনপি এবং জামায়াত ইসলামীর এই জনসমর্থন দেখা গেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানেও এই দল দুটোর ভূমিকা ছিল। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে আমারা যারা নতুন প্লাটফরমের উদ্যোগ নিয়েছি, আমরা বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সবাই দেশের জন্য এক সাথে কাজ করবে এই আকাঙ্ক্ষা রাখি।’
রাফে সালমান রিফাত বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি ছিলেন। কিন্তু শিবির থেকে বিদায় নিয়ে জামায়াতে যোগ দেননি তিনি। তবে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে তার অগ্রণি ভূমিকা ছিল। সেই প্রেক্ষাপটে জুলাই আন্দোলন পরবর্তী নতুন প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যুক্ত হওন। এই প্ল্যাটফর্মের যুগ্ম সদস্য সচিব ছিলেন তিনি। কিন্তু জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠনের পূর্ব মুহূর্তে নানান বিরোধের জেরে সরে দাঁড়ান রাফে সালমান রিফাত ও সাবেক আরেক শিবির নেতা আলী আহসান জুনায়েদ। সম্প্রতি তারা নতুন আরেকটি প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।