, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫ , ১৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


এবার স্কুল-কলেজ থেকে বাদ পড়ছে শেখ হাসিনার নাম

  • আপলোড সময় : ০৬-০২-২০২৫ ০১:০৬:০০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০২-২০২৫ ০১:০৬:০০ অপরাহ্ন
এবার স্কুল-কলেজ থেকে বাদ পড়ছে শেখ হাসিনার নাম
এবার শেখ হাসিনা ও তার পরিবারে নামে থাকা ১৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবার শেখ হাসিনার নামে থাকা দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ইনস্টিটিউশন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নামও পরিবর্তন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শুধু শেখ হাসিনা নয়, জুলাই গণহত্যার সঙ্গে ‍যুক্ত ব্যক্তিদের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামও পরিবর্তন করা হবে। শিক্ষা ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে থাকা সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে। তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করবে এবং নাম পরিবর্তনের কারণসহ প্রস্তাবনা পাঠাবে। পরে নীতিমালার আলোকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হবে।

গত অক্টোবর মাসে উপদেষ্টা পরিষদে সিদ্ধান্ত হয় যে, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হবে। একই সঙ্গে তার দলের নেতাদের নামে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোর নামও পরিবর্তন করা হবে। সেই আলোকে গত ১২ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদে শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশের ১৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নতুন নামকরণ করা হবে এলাকা ও বাংলাদেশের নাম অনুসারে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার নামও পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, সারাদেশে গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়গুলো। উচ্চ শিক্ষা ও মাধ্যমিক বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তালিকা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। স্ব স্ব দপ্তরগুলো ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে। কোথাও কোথাও ডিসিরাও কাজ শুরু করেছেন। সব শেষ করে মার্চ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রস্তুতি রয়েছে ডিসিদের।

এদিকে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে থাকা সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে। তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করবে এবং নাম পরিবর্তনের কারণসহ প্রস্তাবনা পাঠাবে। পরে নীতিমালার আলোকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হবে

দপ্তরগুলোর সূত্র মতে, তালিকা করার ক্ষেত্রে পতিত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তার নামে থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের নামও পরিবর্তন করা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান থাকলে সেগুলোর নামও পরিবর্তন করা হবে। এরপর আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের নেতা, মন্ত্রী বা তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধরা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মাসুদ আকতার খান বলেন, ‍উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে বিষয়টি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে তার মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে তালিকা করার জন্য ডিসি ও ইউএনওদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কাজ ‍শুরু করেছে।

জেলা ও উপজেলাপর্যায়ে আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রী ও স্থানীয়পর্যায়ের শীর্ষনেতাদের নামে থাকা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার তালিকা প্রস্তুত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক- এডিসি (শিক্ষা)। তার সঙ্গে কাজ করবেন জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার। একইভাবে উপজেলাপর্যায়ে ইউএনও’র নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিতে শিক্ষা অফিসার, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও থাকবেন। তারা ওই জেলায় ৫ আগস্টের আগে যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে কমিটির কাছে উপস্থাপন করবে। কমিটি সব বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে প্রতিষ্ঠানের পাশে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অভিযোগ-মামলার তথ্য, কী কারণে নাম পরিবর্তন করতে হবে তার ব্যাখ্যাসহ পরিবর্তিত নাম কী হতে পারে— এমন সব তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন পাঠাবে।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক জেলা প্রশাসক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়ে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করি ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠাতে পারব।’ শুধু মামলা থাকলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হবে, নাকি অন্য কোনো বিষয় এখানে থাকবে— বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি। বলেন, ‘এমন কোনো নীতিমালা বা নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ফলে এ কাজ করতে আমাদের নানা বাধা ও বিতর্কের মুখে পড়তে হবে। শুধু তা-ই নয়, তালিকা করতে স্থানীয়পর্যায় থেকে হয়তো বাধা আসতে পারে।’

তালিকা করার ক্ষেত্রে পতিত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তার নামে থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের নামও পরিবর্তন করা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান থাকলে সেগুলোর নামও পরিবর্তন করা হবে। এরপর আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের নেতা, মন্ত্রী বা তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধরা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মাসুদ আকতার খান বলেন, ‘কোনো ঝামেলা হবে না। ডিসি শুধু স্থানীয়পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন। সেখানে তিনি ওই ব্যক্তির নামে কীভাবে নামকরণ হয়েছে, এখন কেন বাদ দেওয়ার সুপারিশ করছেন— সেই ব্যাখ্যা দেবেন। সেখানে তিনি হত্যা মামলা থাকলে সেই নম্বর ও বিবরণ এবং জুলাই-আগস্ট মাসে তার ভূমিকা কী ছিল— বিষয়গুলো প্রতিবেদন আকারে পাঠাবেন। এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে মন্ত্রণালয়।’

‘এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় একক কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। এখানে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি কাজ করবে। এ ছাড়া নাম পরিবর্তনের জন্য মন্ত্রণালয়ের একটি নীতিমালা রয়েছে। সেই নীতিমালার আলোকেই নাম পরিবর্তন হবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। এমন একটি সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানি। কিন্তু চিঠি পাঠানোর বিষয়ে এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না।’
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণা

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণা