এবার বাজারে সরবরাহ বাড়াতে চাল, তেল ও চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার। তবে, এতে পণ্যের দাম কমছে না, বরং বেড়েছে। কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) দাবি করছে, কর কমানোর লভ্যাংশ পুরোটাই আমদানিকারকরা নিয়ে নিচ্ছে, ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে না। আর মার্কেট রিসার্চ করে পণ্যের দামের পূর্বাভাস নিয়ে কাজ করার তাগিদ সাবেক কর কমিশনারের।
এদিকে দাম কমাতে চাল-চিনিসহ ১১টি পণ্য আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। কোনোটির শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে পুরোপুরি। তারপরও কমেনি দাম, বরং বেড়েছে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে নভেম্বরের শুরুতে ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও ৫ শতাংশ রেগুলেটরি শুল্ক প্রত্যাহার করে সরকার। গত ২-৩ সপ্তাহের ব্যবধানেই সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৮ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে, চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয় ৮ অক্টোবর। তবু, গত ১ মাসের ব্যবধানেই প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩২ থেকে ১৩৫ টাকায়। এ ছাড়া সয়াবিন তেল আমদানিতে দুই দফা শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। এর পরই আবার, প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা থেকে করা হয় ১৭৫। বাড়তি লাভের আশায় সংঘবদ্ধ চক্র বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলছেন, ‘আমদানি শুল্ক বা অন্যান্য ট্যাক্স যখন কমানো হয়, এটার সুফল কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে আসে না। আমরা ইতিমধ্যেই যেটা দেখেছি এটা প্রায়ই আমাদের আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ী বা বড় করপোরেট গ্রুপ, তারা কিন্তু পুরোটাই নিয়ে নিচ্ছে।’
শুধু শুল্ক কমালেই সমাধান মিলবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সব পক্ষকে দ্রব্যমূল্যের পূর্বাভাস নিয়ে মার্কেট রিসার্চ করার তাগিদ বিশ্লেষকদের। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর কমিশনার বজলুল কবির ভূঞা বলেন, ‘আমাদের চাহিদার পূ্র্বাভাস নিরূপণ করে সরকারকে আগাম জানাতে হবে, কখন কোন পণ্যের ঘাটতি হতে পারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে আগেই জানিয়ে রাখতে হবে।’ এদিকে, পেঁয়াজ আমদানিতে ১০ শতাংশ করের সম্পূর্ণই প্রত্যাহার করা হয়। তাও নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। তবে মাসের শেষে তা কিছুটা কমেছে।