অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের একটি ষাঁড় দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করেছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান ও তার স্ত্রী আশেদা বিবি। সাড়ে তিন বছর ধরে পালন করা ষাঁড়টির ওজন এখন ৩০ মণ। সুঠাম দেহের বিশাল আকৃতির ষাঁড়টি দেখার জন্য আশপাশের মানুষ এখন ভিড় করছেন লুৎফরের বাড়িতে।
পালন করা এ ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘বাদশা’। এবার কোরবানির জন্য ষাঁড়টি বিক্রি করা হবে। সাদা-কালোর মিশ্রণে সুঠাম স্বাস্থ্যের বাদশার ওজন প্রায় ৩০ মণ। এই ষাঁড়টি বিক্রির জন্য দাম হাঁকা হয়েছে ১২ লাখ টাকা। তবে স্থানীয়ভাবে এখনো কোনো ক্রেতা জুটেনি।
ষাঁড়টি আনুমানিক লম্বায় ১০ ফুট, উচ্চতায় ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, প্রস্থ ৮ ফুট। প্রায় ১২০০ কেজি ওজনের এ ষাঁড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ১২ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে কয়েকজন ষাঁড়টির দরদাম করেছেন। ন্যায্যমূল্য পেলে ষাঁড়টি বিক্রি করে দেবেন বলে জানান মালিক লুৎফর রহমান।
তিনি বলেন, বাদশাকে হাটে নেওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই বিভিন্নভাবে ষাঁড়টির ছবি ও বর্ণনা অনলাইনে দিয়ে বিক্রি করার চেষ্টা করছেন। লুৎফর রহমান বলেন, বাড়িতে দেশি গরুর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভির জন্ম হয়। সেই গাভি পালন করে একই জাতের ষাঁড়ের সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বাছুর জন্ম দেয় গাভিটি। তিন বছর আগে দেড় লাখ টাকায় সেই গাভি বিক্রি করে শুধু ষাঁড়টি পালন করছেন।
বাদশার খাদ্য তালিকায় আছে কাঁচা ঘাস, খড়, গমের ভুসি, চালের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া, খইল, ছোলা ও খুদের ভাত। সব মিলে দিনে ১৫ থেকে ২০ কেজি করে খাবার খায় বাদশা। শুরুর দিকে খাবার কম খেলেও দিনে দিনে তার খাবারের চাহিদার পরিমাণ বেড়ে যায়।
জন্মের পর থেকেই ষাঁড়টি দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করছেন বলে জানান আশেদা বিবি। তিনি বলেন, সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে একটি গাভি কিনেছিলাম। সেই গাভি থেকে ষাঁড়টি হয়েছে। ষাঁড়টিকে পরিবারের একজন সদস্যের মতো করে পালন করেছি। পরিবারের সবাই মিলে যত্ন করে ষাঁড়টি বড় করা হয়েছে। তার পেছনে সাড়ে তিন বছরে অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে তাদের। ঈদের আগে এখন ভালো দামে বিক্রি করতে চান।
বাগমারা উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আহসান হাবিব বলেন, আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত উপজেলায় ১০ থেকে ১৫ মণ ওজনের কিছু বিশাল আকৃতির ষাঁড় আছে । এছাড়াও শুনেছি বাদশার ওজন ২৫ মণের উপরে। সেটিই উপজেলায় সব থেকে বিশাল আকৃতির ষাঁড়।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে চাহিদার তুলনায় কোরবানিযোগ্য পশু বেশি রয়েছে। এ বছর রাজশাহীতে কোরবানির উপযোগী পশু রয়েছে ৪ লাখ। তবে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।