এবার নিজেদের গড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই এখন বিচারের মুখোমুখি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। মূল অভিযুক্ত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এদিকে নিজেদের গড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই এখন বিচারের মুখোমুখি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও ১৪ দলের শরিক মেনন-ইনুসহ ১৩ জনকে জুলাই গণহত্যা মামলায় কারাগারে পাঠান বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালেই এবার বিচারের মুখোমুখি ওই আদালত গঠনের কুশীলবরাই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অভ্যুত্থানে গণহত্যায় মদদ দিয়েছেন তারা।
সকাল ১০টার দিকে একে একে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় আনা হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকসহ ১৩ জনকে। দেড় ঘণ্টার শুনানির পর সবাইকে কারাগার পাঠান ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যায় নির্দেশ ও প্ররোচণা দেয়ার প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি চিফ প্রসিকিউটরের।
গণহত্যা মামলায় মূল অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুনানিতে তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান বিচারক। রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌসুলী বলেন, ইন্টারপোল ও বন্দি প্রত্যাপন চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার।
এর আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত শেষ করতে আদালতে সময় প্রার্থনা করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের দিন শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে বলেও জানান তাজুল ইসলাম।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে নির্বিচারে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাঠে নামানো হয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ক্যাডারদের। নিরস্ত্র ছাত্রজনতার ওপর সশস্ত্র হামলায় নিহত হন প্রায় ১৫০০ মানুষ। আহত অন্তত ২০ হাজার।