এবার অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান (হুন্ডি সুমন) সহ তিনজনের নামে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) লালমনিরহাট সদর থানায় সিআইডির লালমনিরহাট জেলার সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল হাই সরকার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সুমন খান সদর থানার মৃত বাচ্চু খানের ছেলে।
এদিকে মামলায় উল্লেখিত তথ্যে সুমন খানের কর্মচারী তৌকির আহমেদ মাসুমের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৮৬,৯৫,৬২,১২৭ (একশত ছিয়াশি কোটি পঁচানব্বই লাখ একষট্টি হাজার একশত সাতাশ) টাকা জমা হয়। যা নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। মামলায় উল্লেখ করা হয়, হুন্ডি সুমন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন ওরফে সুমন খানের (৪৬) অবৈধ সম্পদ, ব্যাংক, হোটেল, দালান এবং অন্যান্য ব্যবসাসহ চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ ও মুদ্রা পাচার ইত্যাদির বিষয়ে দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে মামলা দায়ের করা হয়।
হুন্ডি সুমন খানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা ২৩৭,৪৯,৪৮,৭৬ (দুইশত সাইত্রিশ কোটি উনপঞ্চাশ লাখ আটচল্লিশ হাজার সাতশত ষাট) টাকা, সুমন খানের স্ত্রী মোছা. নাহিদা আক্তার রুমা (৪৩) এর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৪,৩৯,৩৫,৩১০/-(চার কোটি উনচল্লিশ লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার তিনশত দশ) টাকা জমা হয়।
সুমন খানের কর্মচারী লালমনিরহাট পুরাণ বাজার নিবাসী হারুনের ছেলে তৌকির আহমেদ মাসুম (৩৮) এর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৮৬,৯৫,৬২,১২৭/- (একশত ছিয়াশি কোটি পঁচানব্বই লক্ষ একষট্টি হাজার একশত সাতাশ) টাকা জমা হয়। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল পরিমাণ অর্থের জমা, স্থানান্তর ও রূপান্তর করা হয়। তাই মামলায় তাদেরকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে ২০০/২৫০ গুণ্ডা বাহিনীর তথ্য পেয়েছে সিআইডি।
এদিকে এলাকায় সুমন খান প্রভাবশালী ও বিশাল অর্থের মালিক হিসেবেই পরিচিত। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে। এলাকাতে তার অপকর্মের কথা ওপেন সিক্রেট থাকলেও কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করত না। ৫ আগস্টে তার বিলাস বহুল বাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয় উত্তেজিত জনতা। এ সময় অটোমেটিক দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসতে না পেরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে পাঁচ ছাত্রের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের বলেন, মানি লন্ডারিং আইনে সুমন খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় তদন্ত ও তাকে গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ও সিআইডি লালমনিরহাট জেলার সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, হুন্ডি সুমনের বিরুদ্ধে মাদক, চোরাচালান, স্বর্ণ ও মুদ্রা চোরাচালানসহ নানান অপকর্মের তথ্য পেয়েছি। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে আপাতত কিছু অর্থের তথ্য পেয়েছি। এর প্রকৃত পরিমাণ আরও অনেক বেশি। আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।