, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


এবার তথ্যচিত্রে উঠে এল জুলাই অভ্যুত্থানের ক্ষত

  • আপলোড সময় : ২৬-১০-২০২৪ ১২:৫২:৩৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৬-১০-২০২৪ ১২:৫২:৩৪ অপরাহ্ন
এবার তথ্যচিত্রে উঠে এল জুলাই অভ্যুত্থানের ক্ষত
এবার ‘জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতির লড়াই’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে পুলিশের আন্দোলন দমানোর চেষ্টা, একাত্তরের মত নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা, লাশ নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যগুলো মানসপটে ফুটে উঠেছে জুলাই-আগস্টের দুর্বার সেই আন্দোলন। তিন মাস পার হলেও, ক্ষত যে রয়ে গেছে আমাদের তা স্পষ্ট দেখিয়ে দিয়েছে এই তথ্যচিত্র। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নৃশংসতার পাশাপাশি ছাত্র-জনতার সাহসিকতা ও ভীতিকর নানা ঘটনা ফুটে উঠেছে প্রদর্শনীতে।
গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় হয়ে যাওয়া এ প্রদর্শনীটির আয়োজন করে ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ সংগঠন। তাদের দাবি জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি ধরে রাখতে ভিডিও এবং স্থিরচিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রদর্শনীতে আরও উঠে এসেছে কোটা সংস্কার ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দৃশ্য, জনতার উদ্যমী স্লোগান, ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের ওপর হামলা এবং পুলিশের ছাত্রলীগকে সুরক্ষিত রেখে হামলা চালানোর সুযোগ করে দেওয়ার চিত্রও।

এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, আন্দোলনের সময়কার বিভিন্ন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রাফিকস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ছাত্রলীগ কর্মী ১৫ জুলাইয়ের হামলায় ছিলেন, তাঁদের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে।

আয়োজকরা জানান, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে টানা ২০ দিনের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের স্মৃতি যাতে মানসপট থেকে হারিয়ে না যায়, সেজন্য তারা এ তথ্যচিত্র প্রদর্শনী করেছেন। পর্দায় হামলা, গণহত্যার দৃশ্য আসামাত্র অন্ধকার ক্যাফেটেরিয়াজুড়ে নেমে আনে পিনপতন নীরবতা। আড়াই শতাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে ধরা দেয় আন্দোলনের আবহ।

তথ্যচিত্র দেখতে আসা শিক্ষার্থী মাহমুদা আক্তার বলেন, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক বৃহস্পতিবার ফেসবুক লাইভে এসে অভ্যুত্থান নিয়ে আজেবাজে কথা বলেছেন। আমাদের আসলে এ বিপ্লব নিয়ে আরও কাজ করা দরকার, যাতে কারও স্মৃতি থেকে বিপ্লব বিস্মৃত না হয়। আমরা যেন মনে রাখি, এত এত মানুষ তাদের তাজা রক্ত ঢেলে দেশটা রক্ষা করেছেন।

তথ্যচিত্রের বিষয়ে ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ সংগঠনের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল-আমিন বলেন, মূলত আমরা পাবলিক সোর্স থেকেই এগুলো সংগ্রহ করেছি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, ফেসবুক পোস্ট, আমাদের নিজস্ব যে অডিও-ভিডিও কালেকশন আছে, তা থেকে এই তথ্যচিত্র করেছি। আমরা নিজেরাও তো আন্দোলনের সময়েরই মানুষ। সম্পূর্ণ জিনিসটাকে আমরা একসঙ্গে সাজিয়েছি।

আবদুল্লাহ আল-আমিন বলেন, আমাদের তথ্যচিত্রকে পরিপূর্ণ ডকুমেন্টেশন বলা যাবে না। ডকুমেন্টেশনটা এখনো চলমান। আমরা এটা এই কারণে করছি যাতে এটা মানুষের চেতনায় থাকে, মনে থাকে। আমরা আমাদের ডকুমেন্টারি সম্পন্ন হলে সারা দেশে দেখানোর ব্যবস্থা করব, বিশেষ করে ক্যাম্পাসগুলোতে। ক্যাম্পাসগুলোতে আগে; এরপর সারা দেশে আমাদের প্রদর্শনী করার ইচ্ছা আছে।

জাস্টিস ফর জুলাইর আহ্বায়ক আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনীকে আমরা বলছি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতির লড়াই। লড়াই এ কারণে, মাত্র তিন মাসেই আমরা গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নানা ন্যারেটিভ তৈরি হতে দেখছি। এটি গণঅভ্যুত্থান কিনা এ প্রশ্নও তোলা হচ্ছে। এর বড় কারণ, গণহত্যায় জড়িত কোনো রাঘববোয়ালকে এখন পর্যন্ত সরকার গ্রেপ্তার করেনি।

তার দাবি গণহত্যা করেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই; বরং লাইভে এসে জাহাঙ্গীর কবির নানক এ গণঅভ্যুত্থানকে বিশৃঙ্খলা এবং শেখ হাসিনার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র বলেছেন। গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা না হলে, গণঅভ্যুত্থানের বিপক্ষে শক্ত ন্যারেটিভ তৈরি করা হবে। আমাদের আশঙ্কা, সেই ন্যারেটিভে আমাদের স্মৃতি থেকেও হারিয়ে যেতে পারে গণঅভ্যুত্থান। আমরা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে জারি রাখার জন্যই তথ্যচিত্র প্রদর্শন করেছি।
‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি‘ থাকছে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে

‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি‘ থাকছে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে