, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ , ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


বাবরি মসজিদ মামলায় রায় দিতে ঈশ্বরের দ্বারস্থ হওয়ার দাবি ভারতের প্রধান বিচারপতির

  • আপলোড সময় : ২২-১০-২০২৪ ০৩:১৯:৩০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-১০-২০২৪ ০৩:১৯:৩০ অপরাহ্ন
বাবরি মসজিদ মামলায় রায় দিতে ঈশ্বরের দ্বারস্থ হওয়ার দাবি ভারতের প্রধান বিচারপতির
এবার বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি মামলা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। বিতর্কিত এই মামলার রায় দেয়ার ক্ষেত্রে ‘ঈশ্বরের দ্বারস্থ’ হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন খোদ প্রধান বিচারপতি। মহারাষ্ট্রের একটি গ্রামে আয়োজিত সভায় রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) ওই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।

তার মন্তব্য সামনে আসার পরেই ভারতজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র বিতর্ক। প্রধান বিচারপতির এমন মন্তব্য ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে রাজনৈতিক মহল থেকে। ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এমন বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন যখন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার কার্যকালের মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি।
 
এদিকে মহারাষ্ট্রের ওই গ্রাম্য সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিতর্কিত ওই মামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতি বলেন, অনেক সময় এমন কিছু মামলা আমাদের হাতে এসে পৌঁছয়, যার কোনও সমাধান খুঁজে পাওয়া যায় না। অযোধ্যা (রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা) নিয়েও একই পরিস্থিতি দেখা দেয়। তিন মাস ওই মামলা নিয়ে কাজ করছিলাম আমি। কী করে সমাধান বেরোবে, মাথায় আসছিল না। ঈশ্বরের সামনে হাতজোড় করে বলেছিলাম, সমাধান ওঁকেই বের করে দিতে হবে। আমি রোজ পুজো করি। ওই দিনও (রায় ঘোষণার দিন) পুজোয় বসে ভগবানের কাছে সমাধান চাই। ঈশ্বরে আস্থা থাকলে, তিনিই রাস্তা বের করে দেবেন বলে বিশ্বাস করি আমি।
 
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের এমন মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেস নেতা উদিত রাজের বক্তব্য, প্রধান বিচারপতি বলছে, অযোধ্যা মামলা নিয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন উনি। উনি অন্য কিছু নিয়ে প্রার্থনা করলে, তারও সমাধান বেরিয়ে আসত নিশ্চয়ই। যেমন টাকা না থাকলেও সাধারণ মানুষ যাতে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিচার পেতে পারেন। ইডি, সিবিআই, আইটি-এর অপব্যবহার বন্ধ হোক।

অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন দলের নেতা ওয়ারিস পাঠান বলেন, প্রধান বিচারপতির পদ অলংকৃত করে রয়েছেন উনি। আমার মনে হয়, এই ধরনের কথা বলা উচিত নয়। দেশ ধর্ম বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে চলবে, না সংবিধানের ওপর নির্ভর করে চলবে? যদি ধর্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে চলে, তাহলে আমাদের আস্থার কী হবে? সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলা উচিত। আপনি যে রায় দিয়েছেন, তা নিয়ে কী ভাবা উচিত আমাদের? কী চলছে, কে কার পক্ষে, দেখতে পাচ্ছি আমরা।

সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব বলেন, মরা মানুষকে বাঁচিয়ে তুলতে গেলে, ভূত তাড়া করে বেড়ায়। এই ধরনের মন্তব্যকে গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন নেই। লোকজন যা ইচ্ছে বলে বেড়ান। সব কিছুকেই গুরুত্ব দিতে হবে নাকি? প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর বাবরি মসজিদ মামলার রায় ঘোষণা হয়। তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের যে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রায় শোনায়, তাতে শামিল ছিলেন অধুনা প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ও।

অযোধ্যার বিতর্কিত ওই জায়গায় আদালতই রামমন্দির নির্মাণের নির্দেশ দেয়। অন্যত্র মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ করতে বলা হয়। চলতি বছর ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রামমন্দির উদ্বোধন করেন। সেই অনুষ্ঠানে বলিউডের লোকজনও আমন্ত্রিত ছিলেন। এরপর জুলাই মাসে অযোধ্যায় রামমন্দির দর্শনে যান প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। সেখানে প্রার্থনা সারেন তিনি।
সর্বশেষ সংবাদ
টাকা না পেয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে তালা দিলো গ্রাহকরা

টাকা না পেয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে তালা দিলো গ্রাহকরা