এবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় হচ্ছে না ‘বাংলাদেশ বইমেলা’। ২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর এই মেলা হয়ে আসছে। একইভাবে কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে কি না, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন বইমেলা কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে, কলকাতার বইমেলাতে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ নাও করতে পারে!
এদিকে কলকাতায় ‘বাংলাদেশ বইমেলা’র আয়োজক সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, আমরা অবশ্যই চাই কলকাতা বইমেলায় অংশগ্রহণ করুক বাংলাদেশ। এর জন্য চিঠিও পাঠাব আমরা। সেটা তারা গ্রহণ করবে কি না, সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ পাঠাচ্ছি না, দেশকে পাঠাচ্ছি। আমরা চাই, বিগত বছরগুলোর মতো কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করুক। কারণ, এই বইমেলায় যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, বাংলাদেশসহ প্রতিবছর ২০-২২টি দেশ অংশগ্রহণ করে। তবে এত শত দেশ অংশগ্রহণ করলেও বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে প্রতিবছর উপচে পড়া ভিড় থাকে। দুই পাড়ের বাঙালির সান্নিধ্য-বাড়ি এই কলকাতা বইমেলায়। বাংলাদেশ এবার যদি অংশ না নেয়, তাহলে মন খারাপ তো লাগবেই।
গত বছরের বইমেলায় ৩ হাজার ২০০ ফুট জায়গাজুড়ে তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন। যেখানে অংশ নিয়েছিল ৪৫টি বাংলাদেশি প্রকাশনা সংস্থা। ছিল ১০টি সরকারি প্রকাশনা সংস্থা। এছাড়া বিগত বছরগুলোর মতো গত বছরও ৪৭তম বইমেলা প্রাঙ্গণে পালন হয়েছিল বাংলাদেশ দিবস। অর্থাৎ এই রাজকীয় আয়োজনে প্রচুর বাংলাদেশির আনাগোনা বাড়ে কলকাতা বইমেলায়।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে এবার ভিসা বন্ধ রেখেছে ভারত। যদি বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে, সেই সমস্যা কীভাবে মিটবে? উত্তরে ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এটা একটা বড় বিষয়। তবে শুধু যদি ভিসা সমস্যা হয় তাহলে আমরা সহযোগিতা করতে পারি। তাছাড়া প্রতিবছরই এ বইমেলার জন্য ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে স্পেশাল পারমিশন নিয়ে রাখি। ফলে বাংলাদেশ যদি অংশগ্রহণ করতে চায়, সেটি বড় সমস্যা হবে না।
এদিকে ভিসা বন্ধ হওয়ায় কলকাতার বুকে কমেছে বাংলাদেশিদের আনাগোনা। এতে অনেকটাই মনমরা হয়ে পড়েছেন কলকাতার হোটেল ব্যবসায়ীরা। যদিও পূজার সময় নিউমার্কেটে খুব একটি বাংলাদেশিদের দেখা মেলে না। ফলে বেচাকেনার ক্ষেত্রে নিউমার্কেটের বিক্রেতারা এখনো বাংলাদেশিদের অভাবটা টের পাননি।
তবে ব্যবসায়ীদের অভিমত, আমরা আগাম আঁচ করতে পারছি। পরিস্থিতি খুব একটা ভালো না। কারণ দুটো ঈদে কলকাতার নিউমার্কেট অনেকটাই নির্ভর করে বাংলাদেশিদের ওপর। ফলে এর মধ্যে ভিসা জটিলতা না কাটলে অবশ্যই জীবিকার ক্ষেত্রে একটা ধাক্কা লাগবে।