এবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বলে উল্লেখ করে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সরকার। এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-গণতন্ত্র বিপন্ন হবে।’
আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন’ আয়োজিত প্রতীকী প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। ‘অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে’ এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এই আন্দোলনের একমাত্র মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন তারেক রহমান। কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যা করা দরকার সবই করেছেন তিনি। এটা যদি কাউকে ব্যাখ্যা করে বুঝাতে হয় তাহলে একটু অসুবিধা আছে। শেখ হাসিনা ১৬ বছর ধরে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছেন। আর তারেক রহমান বিচক্ষণতার সাথে বিএনপিকে রক্ষা করেছেন।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে দুদু বলেন, ‘এই সরকার আমাদের সরকার। এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। সেজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমান সরকারের কাছে খুব বেশি কিছু প্রত্যাশা করি না। ছোট্ট একটি প্রত্যাশা আছে- দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না। তাই যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা সম্ভব হবে তত তাড়াতাড়ি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা সম্ভব হবে তত তাড়াতাড়ি নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনায় তার উপযুক্ততা প্রমাণ করতে পারবে। এটাই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সেদিকেই আমি সরকারকে আহ্বান করি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কবে হবে এই কথাটা যতদিন জাতিকে জানাতে না পারবেন, ততদিন নানান বিতর্ক তৈরি হবে। এই বিতর্ক সৃষ্টিতে সরকারের ভূমিকা থাক এটা আমরা প্রত্যাশা ও পছন্দ করি না।’ এ সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘জ্ঞান-গরীমা ও কর্মের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন ব্যক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বাজারে আগুন লেগে গেছে। দ্রব্যমূল্য এতটাই বেড়েছে যে মানুষ অস্বস্তিতে পড়েছে। নতুন সরকার আসার পরে এই অবস্থা হবে, সেটা কেউ প্রত্যাশা করে নাই। তারা প্রত্যাশা করেছিল, জিনিসপত্রের দাম কমবে। সংস্কার সরকার করবে সে সংস্কার পরবর্তী সরকার সংসদে এসে অনুমোদন করবে।’
কৃষক দলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, ‘এক মাসে কিছু হয় না। একটা সন্তান জন্ম দিতেও নয় মাস লাগে। এক মাসে যদি কোনো সন্তান আনতে হয় সেটা হয় মৃত সন্তান হয়। ১৬টি বছর এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে। ১৬টি বছর এদেশের ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক গুম ও নিখোঁজ হয়েছে। ১৬টি বছর জেল খেটেছে। এক মাসের আন্দোলনের কথা সব বিবেচনায় যদি এনে থাকেন সেটা ঠিক হয়নি।’
এদিকে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মিলেমিশে চলাটাই এ সরকারের সাফল্যের একটি কারণ হতে পারে। দূরত্ব বাড়লে দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য মানুষের বিপদ হতে পারে।’