এবার মুন্সীগঞ্জে স্বামী-শাশুড়ির দেওয়া আগুনে ১ মাস ১৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মানলেন এক গৃহবধূ। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, স্বামী ও শাশুড়ির দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে এতদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন নিহত স্বর্ণা রাণী (২৪) নামে ওই গৃহবধূ।
আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ওই গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছন টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মহিদুল ইসলাম। নিহত স্বর্ণা টঙ্গিবাড়ী উপজেলার নসংঙ্কর গ্রামের কৃষ্ণ সরকারের মেয়ে। এদিকে স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে তার মরদেহ নিজ এলাকার পুরা শ্মশানে দাহ করা হয়েছে। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ওই নারীর মৃত্যু হয়।
গত ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর উত্তর কামারখাড়া গ্রামের মিজি বাড়ির দিলিপ রায়ের ছেলে দীপ্ত রায় পরিবারের অমতে নিহত স্বর্ণা রাণীকে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। দীপ্ত রায় এলাকায় ভবঘুরে ধরনের ও মাদকাসক্ত ছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই দীপ্ত ও তার মা স্বর্ণাকে তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন ও মারধর করতেন। স্বর্ণা বিষয়টি তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের একাধিকবার জানিয়েছিলেন।
পরে এ বছরের ৩০ জুলাই সকালে আবারও যৌতুকের দাবিতে স্বর্ণাকে মারধর করে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন তার স্বামী ও শাশুড়ি। এতে গুরুতর দগ্ধ হলে স্বর্ণার স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেন। পরে চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন। সেখানে ১ মাস ১৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে সোমবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
এদিকে টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। নিহত ওই নারীর পরিবারের অভিযোগ, তার শাশুড়ির দেওয়া আগুনে তিনি দগ্ধ হয়েছেন। ওই নারী মারা যাওয়ার পরে আমাকে তারা ঢাকা থেকে ফোন করেছিলেন। আমি বলেছি, অভিযোগ থাকলে মরদেহ ময়নাতদন্ত করাতে হবে। পরে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’