, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


অটোরিকশার লাইন দখলকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদল নেতা খুন

  • আপলোড সময় : ২৭-০৮-২০২৪ ০৩:২৩:১০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৮-২০২৪ ০৩:২৩:১০ অপরাহ্ন
অটোরিকশার লাইন দখলকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদল নেতা খুন
এবার কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়াঘোনা এলাকায় শহিদুল ইসলাম শওকত (৩৮) নামের শ্রমিক দলের এক নেতাকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে। এ সময় আরও দুজন ছুরিকাঘাতে আহত হন। শহিদুল পেকুয়া সদর পশ্চিম জোন শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি ভোলাইয়াঘোনা এলাকার মৃত শফিউল আলমের ছেলে।
 
গতকাল সোমবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পেকুয়া বাজারের পশ্চিম পাশে গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে ওই ঘটনা ঘটে। তবে শহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রাত সাড়ে ১২টার দিকে। আহত অন্য ব্যক্তিরা হলেন- নিহত শহিদুলের ভাই মোহাম্মদ শাকের (২৫) ও চাচাতো ভাই মোহাম্মদ তারেক (২২)। আহত ব্যক্তিদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, পেকুয়া সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, অপর পক্ষটির নেতৃত্ব দেন সাবেক সহ-সভাপতি বদিউল আলম ও সাজ্জাদুল ইসলাম। এই দুটি পক্ষ যথাক্রমে পেকুয়া উপজেলা শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদের অনুসারী।

এদিকে শ্রমিকদলের অন্তত ৬-৭ জন নেতা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে শ্রমিকদলের দুই পক্ষই পেকুয়া সিএনজি, টেম্পু, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এর জের ধরে ও দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি ঘটেছে।

শ্রমিকদলের নেতারা আরও বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে গত রোববার রাতে শহিদুল ইসলাম শওকত এবং সাজ্জাদুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ পর্যন্ত গড়ায়। 

তিনি সোমবার সকাল ১০টার দিকে দুই পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে বিরোধ মীমাংসা করে দেন এবং বিশৃঙ্খলা করলে দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। এরপর রাত ৮টার দিকে ভোলাইয়াঘোনা রাস্তার মাথায় সাজ্জাদুল ইসলামের এক চাচাতো ভাইকে মারধর করেন শওকত ও তার ভাই শাকের। এই ঘটনার জের ধরে সাজ্জাদুল ইসলামের লোকজন দলবদ্ধ হয়ে শওকত, সাকের ও তারেকের ওপর আক্রমণ করে।
 
এতে তিনজনই ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনেরা আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শওকতকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছালে শওকত মারা যান। শওকতের আত্মীয়-স্বজনেরা জানিয়েছেন, লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ সেখান থেকে পেকুয়া নেয়া হবে।

জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা শ্রমিকদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, হতাহত ও হামলাকারী-সবার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে শ্রমিক সংগঠনের কোনো বিষয় সম্পৃক্ত নেই। আমার সঙ্গে যে ওসমানের বিরোধের কথা বলা হচ্ছে, সেই ওসমানের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। হামলার কথা শুনে আমি আর ওসমান দুজনে একসঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছি।

এদিকে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, হামলার কথা শুনার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কারা খুন করেছে, কি কারণে এবং কেন খুন করা হয়েছে সবই আমরা সংগ্রহ করছি। লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সর্বশেষ সংবাদ