, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


‘আমার আদরের ধন রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতো’

  • আপলোড সময় : ০৩-০৮-২০২৪ ১২:২৭:০১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-০৮-২০২৪ ১২:২৭:০১ অপরাহ্ন
‘আমার আদরের ধন রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতো’
এবার কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর লক্ষ্মীবাজার এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী উমর ফারুক। অনার্স তৃতীয় বর্ষের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। মৃত্যুর দুদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার লাশ খুঁজে পায় স্বজনরা।

এর পরে ২১ জুলাই তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের সিংহা গ্রামে লাশ নেওয়া হয়। সেখানে ওইদিন রাত সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয় পারিবারিক কবরস্থানে। ছেলেকে কবরে চিরনিদ্রায় রেখে কান্না থামছে না মা-বাবার। বড় ভাইকে হারিয়ে পাগলপ্রায় ছোট ভাই। উমরের এমন মৃত্যু মানতে পারছে না আত্মীয়স্বজনসহ পুরো এলাকার মানুষ।

এদিকে তার বন্ধু ও স্বজনদের মাধ্যমে জানা গেছে, মুমূর্ষু রোগীদের রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাতে বন্ধুদের নিয়ে গঠন করেছিলেন ব্লাড ডোনার সোসাইটি নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ওই সংগঠনের প্রধান হিসেবে তিনি শত শত সংকটাপন্ন মানুষকে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। রক্ত দিয়ে মানুষের প্রাণ বাঁচানো এই উমর ফারুকের প্রাণ গেছে গুলিতে। গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর লক্ষ্মীবাজার এলাকায় গুলিতে তিনি নিহত হন।

মৃত্যুর খবর পেয়ে বিদেশ থেকে চলে আসেন ফারুকের বাবা আবদুল খালেক। তিনি বলেন, ‘আমার আদরের ধন রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতো। এখন সে নিজেই বুকের রক্ত দিয়ে দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নিল। পরোপকারী ছেলেটার জীবন এভাবে নিভে যাবে বুঝিনি।’

উমর ফারুকের ছোট ভাই আবদুল্লাহ অনিক জানান, গত ১৯ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গিয়ে পুলিশে গুলিতে মৃত্যু হয় তার। ফারুকের বন্ধুদের মাধ্যমে তারা মৃত্যুর খবর পান। তখন লাশ আনতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে লাশ খুঁজতে চাইলে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে কোনো সুরাহা না পেয়ে নেত্রকোনা-১ আসনের এমপি মোশতাক আহমেদ রুহীর সহায়তায় হাসপাতালে খোঁজার অনুমতি মেলে উমরের স্বজনদের। সেখানে গিয়ে আরও অনেক লাশের মধ্য থেকে ভাইয়ের লাশ খুঁজে পান আবদুল্লাহ। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর দু’দিন পর লাশ গ্রামে আনা হয়।

এদিকে বন্ধুরা উমর ফারুকের পরিশ্রমে গড়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ব্লাড ডোনার সোসাইটি’র কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন। ইতোমধ্যে নাম পরিবর্তন করে শহীদ উমর ফারুক ব্লাড ডোনার সোসাইটি নামকরণ করা হয়েছে। তারা বলছেন, উমরের স্মৃতিকে ধরে রাখতে তার হাতে গড়া ‘ব্লাড ডোনার সোসাইট’র কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন।.
সর্বশেষ সংবাদ