এবার বাংলাদেশ-ভারত রেল ট্রানজিটের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভুটান সীমান্ত পর্যন্ত চলাচল করতে চায় ভারতের ট্রেন। গত জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর উপলক্ষে রেলের ট্রানজিট বিষয়ে সমঝোতার পর ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের পক্ষ থেকে এ নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
তবে ভারতের ট্রেন শিগগিরই বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রানজিট পাচ্ছে না। কারণ রেল ট্রানজিট চালুর জন্য যেসব প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়া দরকার, সেগুলো হতে আরো কিছুটা সময় লাগবে। ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ে এই সময় সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো ধারণা দিতে পারেনি। তবে প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে ৯ সদস্যের একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে ওয়ার্কিং কমিটি প্রথমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে বৈঠক করে মতামত চাইবে। মতামতের ভিত্তিতে ওয়ার্কিং কমিটি একটি প্রস্তাব চূড়ান্ত করে ভারতের রেলওয়ে বোর্ডের কাছে পাঠাবে। ভারতের রেলওয়ে বোর্ড ওই প্রস্তাবের ওপর মতামত দেবে। এর পরই বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় ট্রেন চলাচলের বিষয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তৈরি হবে।
ওই সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের রেলওয়ে একটি চুক্তি করবে। তার পরই শুরু হবে ট্রেন চলাচল। গত বৃহস্পতিবার রেল ভবনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে পরীক্ষামূলক ভারতের খালি ট্রেন (এমটি র্যাক) চালানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে রাজশাহী থেকে কলকাতা পর্যন্ত ট্রেন চালানোর বিষয়ে যে সমঝোতা হয়েছে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ রেলওয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমাদের কয়েকটি মন্ত্রণালয় এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। এ নিয়ে তারা তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে। ওই সিদ্ধান্তগুলো সমন্বয় করে আমরা ভারতকে জানাব। সেটির ওপর আবার ভারত মতামত দেবে। সব মিলিয়ে এটি একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সময় ঠিক কতটা লাগবে সেটি এখন বলা সহজ নয়।’
এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘এর জন্য ৯ সদস্যের একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি বাকি প্রক্রিয়া ঠিক করবে। কমিটি প্রস্তাব তৈরি করলে সেটি ভারতকে জানানো হবে।’ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদীয়া জেলার গেদে রেলওয়ে স্টেশন থেকে আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়ার ডালগাঁও রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চালাতে চায় ভারত। এই দুই স্টেশনের মাঝে বাংলাদেশের রেলপথ ব্যবহার করলে ভারতের ট্রেন চালানোর সময় ও দূরত্ব অনেক কমবে।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দর্শনা দিয়ে প্রবেশ করতে চায় ভারতের ট্রেন। পরে ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর হয়ে চিলাহাটি পর্যন্ত রেলপথ ব্যবহার করে আবার ভারতে প্রবেশ করবে। চিলাহাটি দিয়ে বের হয়ে ভারতের হলদীবাড়ি-জলপাইগুড়ি-ধুপগুড়ি-ফালাকাটা-হাসিমারা হয়ে ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত যাবে গেদে থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন।