, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


আবেদ আলী সরকার পতনের কোনো দলের হয়ে কাজ করছে কি না: প্রশ্ন জনপ্রশাসনমন্ত্রীর

  • আপলোড সময় : ১১-০৭-২০২৪ ০৮:১৩:৩৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৭-২০২৪ ০৮:১৩:৩৪ অপরাহ্ন
আবেদ আলী সরকার পতনের কোনো দলের হয়ে কাজ করছে কি না: প্রশ্ন জনপ্রশাসনমন্ত্রীর
এবার সরকারি চাকরিতে নিয়োগে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী সরকার পতনের আন্দোলন করছে এমন কোনো দলের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে কি না, সেই প্রশ্ন রেখেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দফতরের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

এদিকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, আবেদ আলী যদি সুনর্দিষ্টভাবে তাদের নাম বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাহলে কী করবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাহলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেবে। চাকরিতে যারা নিযুক্ত হবেন, সেক্ষেত্রে কিছু বিষয় রয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই চাকরিতে তাদের আসতে হবে। পিএসসিরও কিছু নিয়ম রয়েছে, সেখানে কোনো ব্যত্যয় ঘটেছে কিনা; তার একটা ব্যাপার আছে। বিষয়টি সবার মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। আমরা গভীর মনোযোগের সঙ্গে বিষয়টি লক্ষ্য করছি। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চলছে। বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে বেশকিছু মানুষ আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

চাকরিবিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেবেন, সেটা কীভাবে হবে, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই বিষয়টি প্রমাণিত হতে হবে। আদৌ অভিযোগ সঠিক কিনা, আসলে কী হচ্ছে। একজন গাড়িচালক, দেখলাম যিনি অন্য একটি দলের স্লোগান দিয়েছেন। তিনি সত্য-কি-মিথ্যা বলেছেন, বিষয়গুলো প্রমাণিত হতে হবে। তিনি কি একটি দলের ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছেন কিনা; অনেকগুলো বিষয় এখানে আছে। তিনি একটি দলের হয়ে কাজ করছেন। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অনেক আগেই তার কাজের কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। সেই সময় তিনি চাকরি করতেন কিনা, জানি না।

তিনি বলেন, ‘একটি দলের হয়ে—যারা সরকার পতনের আন্দোলন করে, সরকারের উন্নয়ন বাধা দিতে চায়—তাদের হয়ে তিনি শ্লোগান দিচ্ছেন, সেটা একটি বিষয়। তবে সত্য-কি-মিথ্যা, সেটা খুই সূক্ষ্মভাবে সরকার তদন্ত করছে।’ পিএসসির প্রশ্নফাঁস নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পিএসসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা নিজেদের চিন্তাভাবনা থেকে সিদ্ধান্ত নেবে। বিষয়গুলো প্রমাণ হতে হবে। সেটার জন্যও চেষ্টা চলছে। এখানে কোনো ত্রুটি নেই, খুবই শক্তভাবে দেখছে সরকার। সিআইডি কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টিতে মনোযোগ দিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘‘যে প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন বাছাই হয়, সেগুলো নিয়ে কথা হয়েছে। তার মধ্যে কোনো ফাঁক আছে কিনা; যার কারণে এরা সুযোগ নিয়েছেন, সেটাও দেখার বিষয়। এগুলো নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে জোর প্রচেষ্টা চলবে। যারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন, তাদের কথাগুলো থাকবে। সব সমন্বয় করে সেখান থেকে সমাধান হবে। আপনাদের একটা পরিসংখ্যান দিচ্ছি। ১৭ জেলা থেকে পুলিশে ছেলে-মেয়ে কেউই সুযোগ পাইনি। ৫৯টি জেলা থেকে কোনো মেয়ে সুযোগ পায়নি। বিষয়টি হচ্ছে, কোটা বিষয়ে আলোচনার ভিত্তিতে যৌক্তিক আলোচনা হতে পারে। কোটা কতটুকু থাকবে, সেটা আলোচনা হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘কোটাবিরোধীরা যখন আদালতে যাবেন, তাদের যুক্তি যখন আদালত শুনবেন, তাদের বোনদের কী হবে, জেলা কোটার কী হবে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা পোষ্যদের জন্য কী হবে, সেটা বিস্তারিত আলোচনা হলে সমাধান সম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, রাস্তা-ট্রেন অবরোধ হওয়ার কারণে আমাদের খাবারের সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হচ্ছে। এতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদেরও বেশি দামে জিনিস কিনতে হচ্ছে। তার বাবা অফিসে যেতে পারছেন না, ছোট ভাই স্কুলে যাতে পারছেন না। সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে। এতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কাজেই এটা নির্বাহী বিভাগের সমাধান না, এটা করবেন আদালত ও বিচার বিভাগ।

মন্ত্রী বলেন, ‘একটা পক্ষ না থাকায় অন্যপক্ষের কথা আদালত বিবেচনায় নিয়েছেন, নির্বাহী বিভাগের অনেক নির্দেশনা আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে। সংবিধানও সেই অনুমোদন দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বলব, কারও মাধ্যমে প্ররোচিত হবেন না। একদল লোক আছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়।’ তিনি বলেন, ‘আদালতের বিষয়টি আদালতে সমাধান হোক। তারপরে যদি আরও কোনো সমাধান করতে হয়, দেশের কল্যাণে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে আমরা সবসময় প্রস্তুত।’
সর্বশেষ সংবাদ