এবার কোরবানির ঈদে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ‘সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম’র ১৫ লাখ টাকার ছাগল। মূলত ওই ফার্মে বিপুল পরিমাণ টাকায় ছাগল কিনতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক তরুণ। এরপর বেরিয়ে আসে ওই তরুণের বাবা মতিউর রহমান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একজন কর্মকর্তা। একজন সরকারি কর্মকর্তার ছেলে কীভাবে এতো টাকায় ছাগল কিনতে আসে, এ নিয়ে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে ফাঁস হয় মতিউর রহমানের দুর্নীতির খবর।
ছেলের ছাগলকাণ্ডের পর এনবিআরের পদ হারান মতিউর, সরে যেতে হয় সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও। বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি মতিউরসহ তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাবও স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তার সম্পদের অনুসন্ধানেও নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনুসন্ধানে ঢাকা, গাজীপুর, সাভার, নরসিংদী, বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গায় মতিউরের নামে বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট, প্লটসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদের খোঁজ মিলেছে। মতিউরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও আছে শতকোটি টাকা।
এদিকে ছাগলকাণ্ডে প্যাঁচে পড়েছে ‘সাদিক এগ্রো’ খামারও। অভিযোগ উঠে এসেছে, ওই খামারের মালিক শাহ ইমরান হোসেন একজন গরু চোরাচালানকারী। তিনি ও তার সিন্ডিকেট বিভিন্ন দেশ থেকে চোরাইপথে নানা জাতের গরু নিয়ে আসেন দেশে। শুধু তাই নয়, মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ-সংলগ্ন আশপাশের খাল ও সড়কের জায়গায় অবৈধভাকে গড়ে উঠে খামারটি। এরপরেই বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে খামারটি উচ্ছেদ করতে অভিযানে নামে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
তবে, সবার মনে একটাই প্রশ্ন যেই ছাগল নিয়ে এতো কাণ্ড সেটি এখন কোথায়? সাদিক এগ্রোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৬২ ইঞ্চি উচ্চতার ওই ছাগলটি খামারেই আছে। ছাগলটি এখনও বিক্রি হয়নি। ঈদের সময় ছাগলটির ওজন ১৭৫ কেজি থাকলেও এখন ওজন কিছুটা কমেছে।
জানা গেছে, ভারত থেকে চোরাই পথে আলোচিত বিটল জাতের ছাগলটি সাদিক এগ্রোতে আনা হয়। বাংলাদেশের বাজারে এই ছাগলের দাম ১৫ লাখ টাকা হাঁকানো হলেও ভারতে এর দাম ২ থেকে ৩ লাখ রুপি, যা বাংলাদেশি টাকায় আড়াই থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, সাদেক এগ্রোর আলোচিত ১৫ লাখ টাকার বিটল জাতীয় ছাগল মূলত পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও ভারতের রাজস্থান পুনেসহ কয়েকটি রাজ্যে দেখা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়া এ ধরনের ছাগল বেড়ে ওঠে না। ফলে দেশের কোন খামারে তো নয়ই কোন হাটেও এ ধরনের ছাগল বিক্রি হয়নি।