, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুন্সীগঞ্জের তরুণীকে নিয়ে পালাল বরিশালের মেয়ে

  • আপলোড সময় : ১৬-০৫-২০২৪ ০৪:৪০:০৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৬-০৫-২০২৪ ০৪:৪০:০৬ অপরাহ্ন
প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুন্সীগঞ্জের তরুণীকে নিয়ে পালাল বরিশালের মেয়ে
তাদের ফেসবুকে পরিচয়। অতঃপর ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা। দেড় বছর সম্পর্কের একপর্যায় দুজন সিদ্ধান্ত নেন বাড়ি ছেড়ে দূর অজানায় পালাবেন তারা। যেই কথা সেই কাজ। তবে বাড়ি ছাড়ার পর একপর্যায়ে প্রেমিকা মেয়েটি বুঝতে পারেন, যার সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্নে বিভোর হয়ে স্বজনদের ছেড়েছেন- সে মানুষটি আসলে তার মতোই আরেকটি মেয়ে!

শুনতে অবাক লাগলেও এ ঘটনা ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের এক মেয়ের সঙ্গে। বুধবার (১৫ মে) ভোরে পরিবারের প্রচেষ্টায় মুন্সীগঞ্জের রাদিয়া ও বরিশালের ফাতেমা জান্নাত আফরিন নামের দুই মেয়েকেই ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ সদরের কাঁশিপুর এলাকার স্কুলছাত্রী রাদিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে বরিশালের আফরান আহমেদ নামের ফেসবুক আইডির একজনের পরিচয় হয় প্রায় দুই বছর আগে। ‘আফরান আহমেদ’ ছদ্মনামে ছেলে সেজে প্রেমের ফাঁদ পাতে বরিশালের ফাতেমা জান্নাতুল আফরিন। রাদিয়া বুঝতে না পেরে ছেলেরূপী ওই মেয়ের সঙ্গেই চালিয়ে যায় প্রেমের সম্পর্ক।

এদিকে ফাতেমার কথায়, গত ১২ মে বাড়ি ছেড়ে যায় রাদিয়া। বরিশাল থেকে লঞ্চে ঢাকায় আসে ফাতেমা। তারপর দুজনের দেখা হয় রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায়। এ সময় চুল কেটে বুকের ওপর টেপ পেঁচিয়ে অপেক্ষারত আফনান ওরফে ফাতেমাকে ছেলেই মনে করে রাদিয়া। ঘর বাঁধার স্বপ্নে প্রথমে লঞ্চে ওঠার চেষ্টা করলেও লঞ্চ না পেয়ে পরে বরিশালের বাসে ওঠে তারা। এরপর বাসে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায় তারা। 

যাত্রায় ফাতেমা কৌশলে তার পরিচয় গোপন রাখলেও এক পর্যায়ে রাদিয়া বুঝতে পারে- আফনান আসলে ছেলে নয়, মেয়েই। বাসে ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে তিন দিনের মাথায় টাকা শেষ হয়ে গেলে রাদিয়ার এক আত্মীয়ের বাসায় গেলে তাদের ধরে ফেলে বাড়ির লোকজন। এ সময় আফনান যে নারী, সেটা বেরিয়ে আসে। 

বুধবার সকাল পৌনে ৫টার দুজনকেই মুন্সীগঞ্জে নিয়ে আসে রাদিয়ার পরিবার। এদিকে রাদিয়ার বাড়ির লোকজন ফাতেমা ওরফে আফনানকে তল্লাশি করে ৫টি সিম ও ১০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দেখতে পায়। এতে ফাতেমা পুরুষ সেজে নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত কি-না তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এদিকে রাদিয়ার দাদা চাঁন মিয়া জানান, দুজনকে যখন ধরা হয় তখন ফাতেমার ওরফে আফরানের নাকে ব্যান্ডেজ করা ছিল। সেটি খোলার পর নাকে রিং পরার ছিদ্র দেখে তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা বুঝতে পারে আফনান আসলে মেয়ে। এ সময় জানতে চাইলে ফাতেমা নিজের আসল পরিচয় দিয়ে তার বাড়ির ঠিকানা দেয়। তবে তার কাছ থেকে অনেকগুলো সিমকার্ড পাওয়ায় আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। 

এ বিষয়ে ফাতেমা সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘ফেসবুকে একটি গ্রুপে পরিচয়। প্রথমে বন্ধুর মতোই কথা বলি। সিরিয়াস কিছুই ছিল না। হয়তো আমার মধ্যে কোনো একটা প্রবলেম আছে। কথা বলতে বলতে বন্ধুত্ব, এরপরে সম্পর্কে জড়িয়েছিলাম। উনারা বলছে নারী পাচার, নারী পাচার। ওই রকম যদি কিছু হতো তা হলে রাদিয়া আমার সঙ্গে যে তিন দিন ছিল, ওই তিন দিনেই আমি কিছু করতে পারতাম।

ও যখন বলছে ওর মামার বাসায় যাবে, তখন আমি বাঁধা না দিয়েই এখানে নিয়ে এসেছি। আমরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছিলাম, ঠিকঠাকমতো খাওয়া-দাওয়া হচ্ছিল না। তখন আমি ওকে বলেছিলাম মুন্সীগঞ্জ চলে যাও। কিন্তু আমার একটা ভুল হয়েছে। আমি ওকে বলিনি যে আমি ছেলে না, মেয়ে।’
সর্বশেষ সংবাদ