এবার একমাত্র সন্তান বৈমানিক আসিম জাওয়াদকে হারিয়ে শোকে কাতর চিকিৎসক বাবা আমান উল্লাহ। প্রিয় সন্তানের লাশ সামনে রেখে বুকে কষ্ট চাপা দিয়ে তিনি জানালেন, জীবনের ঝুঁকি জেনেও একমাত্র সন্তানকে তারা বিমান বাহিনীতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের রেখে সন্তান এভাবে চলে যাবে- সেটা কখনো ভাবতে পারেননি। আজ শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে বিমান বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন আসিমের বাবা।
এ সময় ড. আমান উল্লাহ বলেন, ‘আমি তো ডাক্তার, আমি জানি কতটা জীবন ঝুঁকি আছে এ দায়িত্বে। ওর মাও মানা করেছিল, কিন্তু আমি ওর পছন্দকে শ্রদ্ধা জানিয়ে, ঝুঁকি জেনেও বিমান বাহিনীতে পাঠিয়ে ছিলাম। কিন্তু আমি ভাবিনি যে, আমার ছেলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। আমাকে যখন খবর দেয়া হলো, আমি গিয়ে আমার ছেলেকে দেখে বুঝেছিলাম, আমার জন্য কী অপেক্ষা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ও শুধু আমাদের ছেড়ে যায়নি। ওর ছোট্ট বাচ্চাগুলোকেও ছেড়ে গেল। আমি জানি না, ওর মতো করে বাচ্চাগুলোকে পালন করতে পারব কি না।’ এ সময় তিনি বিমান বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা আমার সন্তানকে যেভাবে সম্মান দেখিয়েছেন, চট্টগ্রামে, ঢাকায় ও এ মানিকগঞ্জে- সব জায়গায় যেভাবে আমার সন্তানকে সম্মান জানিয়েছেন, সেটা আমাদের জন্য গৌরবের।’
আমান উল্লাহ বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আমার ছেলের কর্ম জীবনে কোনো ভুলত্রুটি করে থাকলে, কারও মনে ব্যথা দিয়ে থাকলে দয়া করে ক্ষমা করে দেবেন।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা জহুরুল হক বিমান ঘাঁটি থেকে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়নের পরই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এবং বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানটি কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত হয়ে গুরুতর আহত হন উইং কমান্ডার সোহান ও স্কোয়াড্রন লিডার আসিম। পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে মারা যান স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ।
এদিকে আসিম জাওয়াদ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের ড. আমান উল্লাহ ও নীলুফা আক্তারের ছেলে। আসিমের ছোট ছোট দুটি সন্তান ও স্ত্রী আছেন।