এবার হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, সবাই নিজেদের নিয়ে এত ব্যস্ত যে, শ্রমিকদের আন্দোলন ও তাদের পক্ষে কেউ কথা বলে না। শুধু শ্রমিক দিবস আসলে পাঞ্জাবি পরে অনুষ্ঠানে লম্বা লম্বা বক্তব্য দেন। এরপর আর কাজ করেন না।
তিনি আরও বলেন, সিলেট বিভাগে ১৯ জন সংসদ সদস্য চা বাগানের শ্রমিকদের ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। চা বাগানের শ্রমিকদের কথা বলে নেত্রীর (প্রধানমন্ত্রী) কাছ থেকে সুবিধা নেন, এ রকম এমপি আছেন ১০ থেকে ১২ জন। চা বাগানের শ্রমিকদের ভোট নিয়েছেন, আমার চেয়ে বড় বড় এমপি-মন্ত্রী ছিলেন এবং আছেন সিলেট ও চট্টগ্রামে। তারা একবারও কি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারেন নাই, বাগানের লাখো মানুষের ভোট নিয়েছি।
আমাদের বাগান-শ্রমিকরা মরে যাচ্ছে না খেয়ে। চা বাগান ধ্বংস হচ্ছে। ধ্বংস থেকে বাগান বাঁচান। প্রধানমন্ত্রীকে আমার বলতে হইলো কেন? এত বছর কি করলেন তারা? কথায় কথায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, তাদের কাজ কী? মানুষের টাকা মারা? দুর্দিনে পাশে না থাকা? বাটপারদের ঠিক করতে আমার মতো কিছু আধা পাগলা এমপি দরকার।
গতকাল বুধবার (১ মে) দুপুরে মে দিবস উপলক্ষে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বাংলাদেশ টি এস্টেট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এ সময় তিনি বলেন, আমি ঈগলের এমপি, আমার সৌভাগ্য হয়নি নৌকার এমপি হওয়ার। তারপরও আমি সংসদে দাঁড়াইয়া যত দাবি এবং যত কথা বলেছি, সবগুলোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী অ্যাকশন নিয়েছেন। এইটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। সংসদে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধুকন্যার দোয়া ও আশীর্বাদ পেয়েছি, কারণ সারাজীবন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ করে তাই শিখেছি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মুখে মুখে না, হৃদয়ে থাকতে হবে, রক্তে থাকতে হবে।
সাধারণ নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের কষ্ট যেখানে হয় সেখানেই দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এমপি হও আর না হও, নেতা হও আর না হও, মানুষের কষ্টে তাদের ফেলে যাওয়া যাবে না। তবেই মানুষ বলবে বঙ্গবন্ধুর রক্তের প্রবাহ ওই লোকটার শরীরে।
তিনি আরও বলেন, সংসদে মাসখানেক আগে বক্তব্য দিয়েছিলাম। আমার বক্তব্যের এক মাসের ব্যবধানে চায়ের দাম ৪০০ টাকা করা হয়েছে। কেমনে হইল? আমি কি জাদু জানি! প্রতিবাদ করতে হবে। আমি চা শ্রমিকদের দুর্দিনে পাশে ছিলাম। এখনও আছি। যতদিন আমি বেঁচে থাকব ততদিন পাশেই থাকব। যদি মারা যাই, তাহলে আমার ছেলে-মেয়েদের বলে যাব, তারাও যেন শ্রমিকদের পাশে থাকে।