এবার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হাতে বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ‘অসাধারণ ও উদার’ অভিহিত করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সেই সঙ্গে হামাসকে এই প্রস্তাব দ্রুত মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে যুদ্ধবিরতি ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার জন্য সোমবার (২৯ এপ্রিল) সৌদি আরব সফর শুরুর আগে এই আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, হামাস ইসরাইলের ‘অসাধারণ উদার’ প্রস্তাবে সম্মত হবে বলে আশাবাদী তিনি। এখনও শতাধিক ইসরাইলি নাগরিক হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে।
এসব বন্দির মুক্তির বিনিময়ে আগের মতো কয়েকদিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি করতে চায় ইসরাইল। কিন্তু হামাসের দাবি, ফিলিস্তিনিদের ওপর সব ধরনের অত্যাচার-নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে। গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) হামাসের গাজা বিষয়ক উপপ্রধান খলিল আল হায়া বলেন, গত ১৩ এপ্রিল মিশর ও কাতারের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে (যুদ্ধবিরতির) যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল, তাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দিয়েছে ইসরাইল। এখন তারা বিষয়টি পর্যালোচনা করবে এবং তার জবাব ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে জানাবে।
সেই লক্ষ্যে হামাসের খলিল আল হায়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সোমবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে যাওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে যুদ্ধবিরতি ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার জন্য সৌদি সফর শুরু করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সফরকালে তার কাতার, মিশর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
এদিকে সৌদি-ইসরাইল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পাশাপাশি গাজা পুনর্গঠনের কাজে ইউরোপ কিভাবে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনার জন্যও আরব ও ইউরোপের দেশগুলোকে ব্লিঙ্কেন একজোট করার চেষ্টা করবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। গত বছর ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরাইলে হামলা করে ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ওইদিন দুই শতাধিক ইসরাইলিকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায় তারা।
ওই দিন থেকেই গাজায় তীব্র পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। হামলায় এরই মধ্যে গাজা কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। সাত মাস ধরে চলমান সংঘাতের মধ্যে মাত্র একবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় মূলত বন্দি বিনিময়ের শর্তে গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে উভয় পক্ষ।
মাত্র সাতদিনের সেই যুদ্ধবিরতিকালে দুই শতাধিক বন্দির মধ্যে ১০৮ জনকে মুক্তি দেয় হামাস। বিপরীতে ২৪০ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেয় ইসরাইল। এরপর দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হলেও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর আপত্তির কারণে তাতে অচলাবস্থা তৈরি হয়।