, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


মুরগির এক ডিমের দাম উঠলো ২ লাখ ২৬ হাজার!

  • আপলোড সময় : ১৭-০৪-২০২৪ ১০:১৬:১৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০৪-২০২৪ ১০:১৬:১৩ অপরাহ্ন
মুরগির এক ডিমের দাম উঠলো ২ লাখ ২৬ হাজার!
খুব সাধারণ একটি মুরগির ডিম নিলামে তোলা হলে তিন দিন দরদামের পর সেটি বিক্রি হয় ২ লাখ ২৬ হাজার ভারতীয় টাকায়। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ভারত শাসিত কাশ্মীরের একটি গ্রামে। খবর বিবিসির। এদিকে কাশ্মীরের সোপোর জেলার মাল মাপানপুরা গ্রামের একটি মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে ঈদ উপলক্ষে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারা নগদ অর্থ আর বিভিন্ন সামগ্রী দান হিসেবে সংগ্রহ করবে। এতে কেউ নগদ অর্থ দেন, কেউ থালা বাসন, আবার কেউ মুরগি বা চাল দান করেন। 

মসজিদ কমিটির এক সদস্য নাসির আহমেদ বলেন, ‘আমরা দান সংগ্রহ করছিলাম। তার মধ্যেই একটি ছোট বাড়ি থেকে এক নারী মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসেন। আমার কাছে এসে তিনি একটা ডিম দিয়ে বলেন তার দানটা যেন আমি গ্রহণ করি।’

তিনি আরও বলেন, ওই নারী খুবই গরীব। একটা ভাঙাচোরা ছোট্ট ঘরে একমাত্র ছেলের সঙ্গে বাস করেন। তার দান করা একটা সাধারণ ডিম ছিল সেটি যা মাত্র ভারতীয় ছয় টাকা দামের। কিন্তু অত্যন্ত গরীব ওই নারী যে আবেগ নিয়ে আল্লাহর নামে দান করেছিলেন, সেটাই ওই ডিমটাকে অমূল্য করে তুলেছে।

এদিকে নাসির আহমেদ বলেন, ‘অন্যান্য জিনিষগুলো তো বিক্রি করার জন্য দেয়া গিয়েছিল। কিন্তু আমার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠল ওই ডিমটা নিয়ে কী করা যায়!’ পরে কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিমটাকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনদিন পরে ডিমটা ফেরত নিয়ে নেয়া হবে, এরকম সিদ্ধান্তও জানানো হয়।

ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ না করেই নাসির আহমেদ ডিমটাকে নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেন। তিনি নিজেই দশ ভারতীয় টাকা নিয়ে নিলামে প্রথম দর হাঁকেন। প্রথমেই ডিমটার দাম উঠে দশ হাজার ভারতীয় টাকা। তারপরে দর বাড়ানো হয়।
 
নাসির আহমেদ আরও জানান, ‘প্রথম দুদিনে ১০, ২০, ৩০ ও ৫০ হাজার ভারতীয় টাকা পর্যন্তও দর উঠেছিল। প্রতিবারই ডিমটা ফেরত নিয়ে নেয়া হয়।’ এরপর শেষ দিনে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত নিলাম চলবে, এরকম একটা ঘোষণা দেয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দর যিনি দিতে পারবেন,তার হাতেই ডিমটা দেয়া হবে বলেও জানানো হয়।

শেষ দিনের নিলামে হাজির ছিলেন সোপোরের ব্যবসায়ী দানিশ হামিদ। নিলামে দুবার হাঁক দেয়া হয়েছিল ৫৪ হাজার ভারতীয় টাকার। একেবারে শেষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যবসায়ী হামিদ দর হাঁকেন ৭০ হাজার টাকা। এভাবেই মোট দুই লাখ ২৬ হাজার ৩৫০ ভারতীয় টাকা জমা হয়।

নাসির আহমেদ বলেন, এটা এখন আর একটা সাধারণ ডিম নয়। প্রতীকী হয়ে উঠেছে ডিমটি। দানিশ হামিদ বলেন, ‘আমি এখন ওই ডিমটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার জন্য একটা ভালো ফ্রেম বানাচ্ছি। সামলিয়ে রাখতে হবে এটা।’ তিনি চান এ ডিমের ব্যাপারটা যেন তার পরিবার, অথবা যারাই দেখতে আসবেন তাদের কাছে যেন স্মরণীয় হয়ে থাকে।  তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় সত্যিকারের অনুভূতির কোনও মূল্য হয় না। আর তাই এই ডিমটা আমার বাড়িতে সবসময়ে সাজিয়ে রেখে দেয়া হবে, যাতে ভেঙ্গে না যায়।’

এদিকে গ্রামের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান তারিক আহমেদ বলেন, ‘আড়াইশো মানুষের এই গ্রামে বড় জামাতের মসজিদ ছিল না। সেজন্যই একটা বড় মসজিদ বানানোর কাজ শুরু করেছিলাম আমরা।কিন্তু তহবিলের অভাবে ছাদ পর্যন্ত বানিয়ে আর কাজ এগোনো যায়নি।’ তিনি আরও জানান, এটা ভাবতেও পারেননি যে একটা ডিম নিলামে তুলে সোয়া দুই লাখ ভারতীয় টাকা তারা সংগ্রহ করতে পারবেন।
সর্বশেষ সংবাদ
নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র তত বৃদ্ধি পাবে: তারেক রহমান

নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র তত বৃদ্ধি পাবে: তারেক রহমান